আপনাদের জন্য এখন দেওয়া হচ্ছে আরো একটি রেসিপিগুচ্ছ। এটি রেসিপিগুচ্ছটি আমরা সাজিয়েছি ইলিশ মাছের বিভিন্ন পদের খাবারের রেসিপি দিয়ে। দেখে নিন ইলিশ মাছের ১৯টি রেসিপি একসঙ্গে।
ইলিশ মাছের মালাইকারি
উপকরণ :১. ইলিশ মাছ মাঝারি আকারের ১টি,২. টকদই সিকি কাপ,৩. নারকেলের দুধ ২ কাপ,৪. আদা বাটা ১ চা-চামচ,৫. জিরা বাটা আধা চা-চামচ,৬. পেঁয়াজ বাটা ১ টেবিল চামচ,৭. কাঠবাদাম বাটা ১ টেবিল চামচ,৮. কিশমিশ বাটা ১ টেবিল চামচ,৯. হলুদগুঁড়া আধা চা-চামচ,১০. মরিচগুঁড়া ১ চা-চামচ,১১. কাঁচা মরিচ ফালি ৪-৫টি,১২. পেঁয়াজকুচি ১ কাপ,১৩. পেঁয়াজ বেরেস্তা সিকি কাপ,১৪. লবণ পরিমাণমতো,১৫. চিনি ২ চা-চামচ,১৬. তেল পৌনে এক কাপ।
প্রণালি :> তেল গরম করে পেঁয়াজ ভাজতে হবে। পেঁয়াজ নরম হলে সমস্ত বাটা মসলা, গুঁড়া মসলা কষিয়ে মাছ টক দই ও লবণ দিয়ে কিছুক্ষণ ভুনে নারকেলের দুধ দিয়ে দিন। ঝোল কমে এলে চিনি, কাঁচা মরিচ দিয়ে কিছুক্ষণ চুলায় রেখে বেরেস্তা দিয়ে নামাতে হবে ইলিশ মাছের মালাইকারি।
ভাপে সরিষায় ইলিশ
উপকরণ :১. ইলিশ মাছ (পেটি ও গাদাসহ) ৬ টুকরা,২. সরিষা বাটা ১ টেবিল চামচ,৩. পোস্ত দানা বাটা ১ টেবিল চামচ,৪. লাল কাঁচা মরিচ বাটা ২ চা-চামচ,৫. হলুদগুঁড়া ১ চা-চামচ,৬. পেঁয়াজকুচি আধা কাপ,৭. কাঁচা মরিচ ফালি ৫-৬টি,৮. লবণ পরিমাণমতো,৯. সরিষার তেল ৪ টেবিল চামচ।
প্রণালি :> মাছ সমস্ত উপকরণ দিয়ে মাখিয়ে ১ ঘণ্টা রাখতে হবে। বাটিতে অথবা সসপ্যানে মসলাসহ মাছ সাজিয়ে আধা কাপ পানি দিয়ে ভালো করে ঢেকে দিতে হবে। প্রেশার কুকারে অথবা প্যানে অল্প পানি দিয়ে পানির ওপর মাছের পাত্র রেখে ঢাকনা দিয়ে ভালো করে ঢেকে অল্প আঁচে ৩৫-৪০ মিনিট রান্না করুন।
সরিষা ভুনায় ইলিশ
উপকরণ :১. ইলিশের মাথা ২টি, লেজ ২টি,২. সরিষা বাটা আধা কাপ,৩. চাল কুমড়া বাটা দুই কাপ,৪. কাঁচা মরিচ ৭-৮টা,৫. সয়াবিন তেল আধা কাপ,৬. তেজপাতা ২টি,৭. আস্ত জিরা আধা চা-চামচ,৮. পেঁয়াজ কুচি আধা কাপ,৯. আদা বাটা ১ চা-চামচ,১০. রসুন বাটা ১ চা-চামচ,১১. হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ,১২. চিনি ১ চা-চামচ,১৩. লবণ পরিমাণমতো।
প্রণালি :> বিচিসহ লাউয়ের বুকঅথবা কুমড়ার বুকসেদ্ধ করে বেটে অথবা ব্লেন্ড করে নিতে হবে। ইলিশ মাছের মাথা ও লেজ ছোট টুকরা করে ধুয়ে সামান্য হলুদ ও লবণ মাখিয়ে রাখুন। প্যানে তেল যখন গরম হয়ে আসবে, তখন জিরা ও তেজপাতার ফোড়ন দিয়ে পেঁয়াজ দিয়ে দিন। পেঁয়াজ যখন চকচকে হবে তখন মাছের মাথা দিয়ে নেড়ে সব বাটা ও গুঁড়া মসলা দিয়ে কষাতে হবে। ১ কাপ পানি দিয়ে ভালোভাবে কষানো হলে চালকুমড়া ও সরিষা বাটা দিয়ে নাড়তে হবে। নাড়তে নাড়তে যখন গোল হয়ে আসবে, তখন ২-৩ টেবিল চামচ সরিষার তেল দিয়ে আবার নাড়ুন। গোল হয়ে এলে নামিয়ে পরিবেশন করুন।
বি.দ্র. চাল কুমড়া/লাউয়ের বুক রান্নার সময় ফেলে না দিয়ে সেদ্ধ করে ডিপ ফ্রিজে একটু একটু করে জমিয়ে রেখে খেতে পারেন।
দই ইলিশ
উপকরণ :১. ইলিশ মাছ এক কেজি ওজনের (মাথা ও লেজ বাদ দিয়ে ছয় টুকরা করে কাটা),২. সরষের তেল আধা কাপ,৩. পেঁয়াজ (স্লাইস করা) দুটি,৪. ধনিয়াগুঁড়া এক টেবিল চামচ,৫. শুকনা মরিচগুঁড়া আধা টেবিল চামচ,৬. সরিষা বাটা এক টেবিল চামচ,৭. কাঁচা মরিচ পাঁচ-ছয়টি,৮. টকদই এক কাপ,৯. লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি :> মাছ ধুয়ে লবণ মাখিয়ে রাখুন। সরষের তেলে পেঁয়াজ ভেজে নিন। লবণ, শুকনা মরিচগুঁড়া ও ধনিয়াগুঁড়া দিয়ে দিন। তেল ভেসে ওঠা পর্যন্ত নাড়তে হবে। এরপর মাছ আর সরষে বাটা দিন। কিছুক্ষণ পর কাঁচা মরিচ ও টকদই দিয়ে ৮-১০ মিনিট পর নামিয়ে ফেলুন।
স্মোকড ইলিশ
উপকরণ :১. বড় ইলিশ মাছ ১টি,২. হলুদ গুঁড়া আধা চা-চামচ,৩. লবণ প্রয়োজনমতো,৪. শুকনা মরিচ গুঁড়া আধা চা-চামচ,৫. সয়াবিন তেল এক টেবিল চামচ,৬. পেঁয়াজ কুচি ২ টেবিল চামচ,৭. কালো গোলমরিচ গুঁড়া দেড় চা-চামচ,৮. ভিনেগার ২ টেবিল চামচ,৯. সয়াসস ১ চা-চামচ,১০. ফিশ সস আধা চা-চামচ,১১. সাজানোর জন্য—লেবু ১টি,১২. ধনিয়াপাতা ১ আঁটি১৩. কয়েকটি রঙিন ক্যাপসিকাম।
প্রণালি :> মাছ ধুয়ে কাঁটা ছাড়িয়ে নিন। দুটো আলাদা আলাদা ফিলে তৈরি করুন। ১৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ওভেনে প্রি-হিট করুন। হলুদ গুঁড়া, লবণ, শুকনা মরিচ গুঁড়া, সয়াবিন তেল, পেঁয়াজ কুচি, কালো গোলমরিচ গুঁড়া, সয়াসস ও ভিনেগার একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। মিশ্রণটি ফিলে দুটিতে ভালোভাবে মাখিয়ে নিন। তেল মাখানো বেকিং ট্রেতে ফিলে দুটি এমনভাবে রাখুন, যেন মাছের চামড়ার অংশ নিচের দিকে থাকে। ১৫০-১৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ২৫-৩০ মিনিট বেক করুন। ১৫ মিনিট পর ফিলে দুটি উল্টে দিন। এতে দুপাশই ভালোভাবে বেক করা হবে। কাঁটা চামচের সাহায্যে মাছের ছোট কাঁটাগুলো বেছে ফেলুন। রঙিন ক্যাপসিকাম, তাজা ধনেপাতা আর লেবুর স্লাইস দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করতে পারেন। এক ইঞ্চির তিন ভাগের এক ভাগ পুরু টোস্ট করা পাউরুটিসহ পরিবেশন করতে পারেন স্মোকড ইলিশ।
ইলিশ রোস্ট
উপকরণ- ১-১. গোটা ইলিশ মাছ একটি,২. মরিচগুঁড়া এক চা-চামচ,৩. ময়দা এক টেবিল চামচ,৪. কর্নফ্লাওয়ার এক টেবিল চামচ,৫. লেবুর রস একটেবিল চামচ,৬. তেল ভাজার জন্য,৭. লবণ স্বাদমতো।
উপকরণ – ২-১. টমেটোকুচি আধা কাপ,২. পেঁয়াজকুচি আধা কাপ,৩. পেঁয়াজ বাটা সিকি কাপ,৪. টমেটো সস সিকি কাপ,৫. আদা বাটা এক চা-চামচ,৬. টকদই এক টেবিল চামচ,৭. মরিচগুঁড়া এক চা-চামচ,৮. তেল আধা কাপ,৯. সামান্য হলুদগুঁড়া,১০. কাঁচা মরিচ পাঁচটি, ১১. লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি- ১ :> প্রথমে পুরো ইলিশ মাছের মাঝ বরাবর কেঁচে নিন, যাতে এর ভেতরে মসলা ঢুকতে পারে। এরপর লবণ, মরিচগুঁড়া ও লেবুর রস মাখিয়ে রাখুন এক ঘণ্টা। পাত্রে তেল গরম করুন। শুকনো ময়দার সঙ্গে কর্নফ্লাওয়ার মিশিয়ে নিন। আগে থেকে ম্যারিনেট করে রাখা মাছের দুদিকেই ময়দার মিশ্রণ লাগিয়ে নিন। এবার মাছটিকে গরম তেলে ডিপ ফ্রাই করুন। ধূসর রং হয়ে এলে নামিয়ে রাখুন।
প্রণালি -২ :> পাত্রে তেল গরম করুন। হালকা করে পেঁয়াজকুচি ভেজে নিন। এরপর সব মসলা দিয়ে সামান্য ভেজে নিন। টমেটোর কুচি দিন। কিছুক্ষণ পর রান্না হয়ে এলে কাঁচা মরিচ ও টমেটো সস দিন। মাখা মাখা হয়ে এলে ভেজে রাখা ইলিশ মাছের ওপর ছড়িয়ে পরিবেশন করুন।
ইলিশ মাছের ডিমে মিষ্টিকুমড়া
উপকরণ :১. কাঁচা মিষ্টিকুমড়া ৫০০ গ্রাম,২. মাছের ডিম ২টা,৩. পেঁয়াজ ২টা,৪. লবণ স্বাদমতো,৫. তেজপাতা ১টা,৬. লাল কাঁচা মরিচ স্বাদমতো।
প্রণালি :> মিষ্টিকুমড়া টুকরো (কিউব) করে কেটে নেওয়া। পেঁয়াজ হালকা ভাজা। তাতে মিষ্টিকুমড়া দিয়ে, লবণ দিতে হবে পরিমাণমতো। এতে আলাদা কোনো বাটা/গুঁড়া মসলা দিতে হবে না। শুধু পেঁয়াজই যথেষ্ট। ১টি তেজপাতা দিতে হবে। এই রান্না করার সময় হাঁড়ি ঢাকতে হবে না। ঢেকে দিলে মিষ্টিকুমড়ার রঙ নষ্ট হয়ে যাবে। কুমড়া সেদ্ধ হয়ে এলে মাছের ডিম দেওয়া হবে তাতে। ডিমের রং যেন ভালো দেখায় এ জন্য হলুদ দিতে হবে আধা চা-চামচ পরিমাণ। ধীরে ধীরে নাড়তে হবে। ডিম আধা সেদ্ধ হয়ে এলে তাতে কাঁচা মরিচ দিয়ে চুলায় আরও ৫ মিনিট রেখে দিন।
কচুশাক দিয়ে ইলিশের মাথা
উপকরণ :১. কচুশাক ২৫০ গ্রাম,২. ইলিশ মাছের মাথা ২টা,৩. পেঁয়াজ ১টা (ছেঁচা),৪. রসুন ১টা (ছেঁচা),৫. জিরাবাটা অল্প পরিমাণ,৬. তেজপাতা ১টা,৭. লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি :> শাক সেদ্ধ করে নিতে হবে। পেঁয়াজ ছেঁচা, রসুন ছেঁচা, জিরাবাটা, তেজপাতা ও লবণ দিয়ে মাছের মাথা কষিয়ে নিন। সেদ্ধ কচুর শাক কষানো মাছে দিয়ে আস্তে আস্তে নাড়ুন। নামানোর আগে লেবুর রস দিয়ে দিন।
কচুর মুখিতে ইলিশ
উপকরণ :১. ইলিশ মাছ চার টুকরা,২. কচু মুখি ২৫০ গ্রাম (ছড়া কচু নামেও পরিচিত),৩. আদাবাটা ২ টেবিল চামচ,৪. জিরাবাটা ২ টেবিল চামচ,
৫. রসুনবাটা ২ টেবিল চামচ,৬. পেঁয়াজবাটা ২ টেবিল চামচ,৭. লবণ, হলুদগুঁড়া ও মরিচগুঁড়া পরিমাণমতো।
প্রণালি :> মাছে সামান্য পরিমাণ হলুদগুঁড়া, মরিচগুঁড়া ও লবণ দিয়ে হালকা ভেজে নিতে হবে আগে। এখানে ভাজার জন্য সরিষার তেল ব্যবহার করুন। এরপর সব বাটা মসলা আর লবণ দিয়ে কচুর ছড়া কষিয়ে নিতে হবে। কষানো হলে তাতে পানি দিয়ে দিন ঝোলের জন্য। চুলায় মাঝারি আঁচে কচু হতে থাকুক। ফুটে উঠলে মাছ দিয়ে আরও কিছুক্ষণ কষাতে হবে। নামানোর পাঁচ মিনিট আগে কয়েকটি কাঁচা মরিচ তরকারির ওপর ছড়িয়ে দিন।
মচমচে ইলিশ ভাজা
উপকরণ :১. ইলিশ মাছ (গাদা ও পেটিসহ) ৬ টুকরা,২. মরিচগুঁড়া আধা চা-চামচ,৩. হলুদগুঁড়া আধা চা-চামচ,৪. লেবুর রস ১ টেবিল চামচ,৫. আদার রস ২ চা-চামচ,৬. লবণ পরিমাণমতো,৭. ময়দা ৩ টেবিল চামচ,৮. পেঁয়াজকুচি ৩ টেবিল চামচ,৯. কাঁচা মরিচ ৩-৪টি,১০. তেল ভাজার জন্য।
প্রণালি :> তেল, পেঁয়াজ, কাঁচা মরিচ, ময়দা বাদে বাকি সব উপকরণ দিয়ে মাছ মাখিয়ে ২০-২৫ মিনিট রেখে ময়দায় গড়িয়ে গরম ডুবো তেলে সোনালি রং ভেজে ওঠাতে হবে। ওই তেলে পেঁয়াজ, কাঁচা মরিচ ভেজে মাছের ওপর দিয়ে পরিবেশন করুন।
ইলিশ ভাজা
উপকরণ :১. মাঝারি আকারের ইলিশ ১টি (মাথা-লেজসহ ৬ টুকরা),২. আদাবাটা ২ টেবিল চামচ,৩. জিরাবাটা ২ টেবিল চামচ,৪. রসুনবাটা ২ টেবিল চামচ,৫. পেঁয়াজবাটা ২ টেবিল চামচ,৬. লবণ পরিমাণমতো,৭. মরিচগুঁড়া পরিমাণমতো,৮. হলুদগুঁড়া পরিমাণমতো,৯. সরিষার তেল পরিমাণমতো।প্রণালি:> মাছের টুকরোগুলো ধুয়ে নিতে হবে। আদাবাটা, জিরাবাটা, রসুনবাটা, পেঁয়াজবাটা বাটিতে নিয়ে এর সঙ্গে পরিমাণমতো মরিচগুঁড়া, হলুদগুঁড়া ও লবণ নিন। এগুলো একসঙ্গে মাছের সঙ্গে মেখে ১০ মিনিট রেখে দিতে হবে। এরপর সরিষার তেলে মাঝারি আঁচে ভেজে নিন। খুব অল্প তেলে ইলিশ মাছ ভাজলে পরিবেশনের সময় ভালো দেখায়। মাছের তেলে কয়েকটা শুকনো মরিচও ভেজে নিন। পরিবেশনের সময় ভাজা মরিচ মাছের পাশে সাজিয়ে দিতে পারেন।
পোলাওয়ে লাউপাতায় মোড়ানো ইলিশ
উপকরণ :১. মাছ ৬ টুকরা,২. আধা কেজি পোলাওয়ের চাল,৩. সাদা সরিষাবাটা ৩ টেবিল চামচ,৪. কাঁচা মরিচবাটা ৩ টেবিল চামচ,৫. পেঁয়াজবাটা ১ টেবিল চামচ,৬. রসুনবাটা ১ টেবিল চামচ,৭. লবণ স্বাদমতো,৮. লাউপাতা পরিমাণমতো,৯. সয়াবিন তেল পরিমাণমতো,১০. ঘি পরিমাণমতো,১১. আদার রস দুই চা-চামচ,১২. পেঁয়াজের রস দুই চা-চামচ,১৩. পেঁয়াজ বেরেস্তা পরিবেশনের জন্য,১৪. কাঁচা মরিচ পরিবেশনের জন্য।
প্রণালি :> প্রথমে মাছে ৩ টেবিল চামচ সাদা সরিষাবাটা, কাঁচা মরিচবাটা, ১ টেবিল চামচ পেঁয়াজবাটা, রসুনবাটা, লবণ পরিমাণমতো দিয়ে মেখে ১০ মিনিট রেখে দিন। এরপর প্রতি টুকরা মাছকে পরিষ্কার লাউপাতা দিয়ে মুড়ে সুতো দিয়ে বেঁধে রাখুন। কড়াইয়ে তেল দিয়ে, একটু (দুই চা-চামচ) আদার রস, পেঁয়াজের রস দিয়ে ধোয়া পোলাওয়ের চাল কিছুক্ষণ ভেজে নিন। এর সঙ্গে ঘি দিন অল্প পরিমাণে। চাল হালকা লালচে হয়ে এলে পানি দিন এবং সেদ্ধ হওয়ার জন্য ঢেকে দিন। কিছুক্ষণ পর চাল ফুটে উঠলে সরিয়ে তাতে লাউপাতা মোড়ানো ইলিশগুলো ছেড়ে দিন। চুলার আঁচ কমিয়ে দিন। ২০-২৫ মিনিট অল্প আঁচে চুলায় রাখুন। নামিয়ে নেওয়ার আগে দেখে নিন চাল পুরোপুরি সেদ্ধ হয়েছে কি না। এরপর পরিবেশনের আগে পেঁয়াজের বেরেস্তা, মরিচ দিয়ে পরিবেশন করুন।
আনারসে ইলিশ
উপকরণ :১. ইলিশ মাছ এক কেজি (মাথা ও লেজ বাদ দিয়ে আট টুকরা করে কাটা),২. তেল এক কাপের তিন ভাগের এক ভাগ,৩. পেঁয়াজ (মিহি কুচি) দুই কাপ,৪. হলুদগুঁড়া আধা চা-চামচ,৫. মরিচগুঁড়া আধা চা-চামচ,৬. ধনিয়াগুঁড়া এক চা-চামচ,৭. আনারস কুচি আধা কাপ,৮. কাঁচা মরিচ চারটি,৯. লবণ ও চিনি স্বাদমতো।
প্রণালি :> মাছ ফালি করে নিন। ধুয়ে পানি ফেলে দিন। মাছের ফালি কিচেন পেপারে (পানি শোষণ করে, এমন টিস্যু পেপার) শুকিয়ে নিন। আলাদা একটি পাত্রে আধা কাপ পানি নিয়ে এতে সব গুঁড়া মসলা গুলে নিন। সসপ্যানে তেল গরম করুন। এরপর সসপ্যানে পেঁয়াজের কুচি ও পানিতে গোলানো মসলা দিন। তেল আলাদা না হয়ে যাওয়া পর্যন্ত নাড়তে থাকুন। এরপর একে একে আনারস, চিনি ও লবণ দিন। দুই মিনিট পর এক কাপ পানি দিন। মাছের ফালিগুলো সসপ্যানে বিছিয়ে দিন। ঢাকনা খোলা রাখুন। মাঝারি আঁচে রান্না করুন। ঝোল ঘন হয়ে এলে মরিচ দিন। এরপর হালকা আঁচে রাখুন তেল ভেসে ওঠা পর্যন্ত। পোলাও, নরম ভাত বা পাউরুটির সঙ্গে পরিবেশন করুন।
প্রেশারকুকারে ইলিশের লেজ, মাথা
উপকরণ :১. ইলিশের মাথা ৩টা,২. ইলিশের লেজ ৩টা,৩. পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ,৪. কাঁচা মরিচ ১০টা,৫. হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ,৬. সয়াবিন তেল আধা কাপ,৭. পেঁয়াজ বাটা ২ টেবিল চামচ,৮. লবণ পরিমাণমতো।
প্রণালি :> মাথাগুলো লম্বালম্বি দুই ভাগ করে কেটে ভালো করে ধুয়ে নিন। এবার সব উপকরণ দিয়ে ভালোভাবে মাখিয়ে আড়াই কাপ পানি দিয়ে প্রেশারের ঢাকনা বন্ধ করে মাঝারি আঁচে ১০টি হুইসেল দিতে হবে। ১০ মিনিট পর কুকার খুলে যদি দেখা যায় বেশি ঝোল আছে, তাহলে ঝোল টানিয়ে নিতে হবে। এবার পরিবেশন। প্রেশারকুকারে রান্না করাতে কাঁটা নরম হয়ে যাবে।
কুমড়া পাতায় নোনা ইলিশ
উপকরণ :১. নোনা ইলিশ ১ কাপ,২. পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ,৩. কাঁচা মরিচ ১০-১২টা,৪. সরিষার তেল আধা কাপ,৫. রসুন কুচি ২ টেবিল চামচ,৬. কুমড়া পাতা প্রয়োজনমতো,৭. নারকেল বাটা আধা কাপ,৮. সরিষা বাটা সিকি কাপ,৯. তিল বাটা সিকি কাপ,১০. হলুদগুঁড়া আধা চা-চামচ,১১. মরিচগুঁড়া আধা চা-চামচ,১২. ধনিয়াগুঁড়া আধা চা-চামচ,১৩. জিরাগুঁড়া ১ চা-চামচ,১৪. লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি :> নোনা ইলিশ ছোট টুকরা করে ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। যেন লবণ না থাকে ধোয়ার পর। পাত্রে তেল গরম করে পেঁয়াজ ও রসুন কুচি একটু ভেজে সব গুঁড়া ও বাটা মসলা দিয়ে আধাকাপ পানি দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। এবার ইলিশের টুকরাগুলো দিয়ে ভুনা ভুনা করে নামিয়ে নিন। এবার কুমড়া পাতা বিছিয়ে তার মধ্যে ২ টেবিল চামচ করে ভুনা লোনা ইলিশ দিয়ে পরোটার মতো করে নিতে হবে। এভাবে ৭/৮ টুকরা নোনা ইলিশ দিয়ে পাতা ভাঁজ করে নিতে হবে। এবার একটি ফ্রাইপ্যানে সামান্য তেল ছড়িয়ে ২টি করে কুমড়া পাতা বিছিয়ে তার ওপর ভাঁজ করা ইলিশের বড়াগুলো সাজিয়ে তার ওপর কয়েকটি কাঁচা মরিচ ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ঢেকে দিন। পাতাগুলো যখন সেদ্ধ হয়ে যাবে, তখন নোনা বড়াগুলো পোড়া করে বা বাদামি রং হলে নামিয়ে নিন। এবার গরম গরম পরিবেশন করুন।
ইলিশের খাট্টা মিঠা
উপকরণ :১. ইলিশের মাথা ২টা,২. ইলিশের লেজ ২টা,৩. পাঁচফোড়ন আধা চামচ,৪. শুকনা মরিচ ৩টি,৫. তেঁতুলের মাড় আধা কাপ,৬. আখের গুড় গ্রেট করা আধা কাপ,৭. সয়াবিন তেল আধা কাপ,৮. হলুদগুঁড়া আধা চা-চামচ,৯. মরিচগুঁড়া আধা চা-চামচ,১০. ধননিয়াগুঁড়া আধা চা-চামচ,১১. আদা বাটা ১ চা-চামচ,১২. রসুন বাটা আধা চা-চামচ,১৩. পেঁয়াজ বাটা ২ টেবিল চামচ,১৪. লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি :> ইলিশের মাথা পছন্দমতো টুকরা করে ভালোভাবে ধুয়ে রাখতে হবে। ২. প্যানে অর্ধেক তেল দিয়ে পাঁচফোড়ন ও শুকনা মরিচ বাদে বাকি সব মসলা দিয়ে ও আধা কাপ পানি দিয়ে ভালোভাবে কষিয়ে মাথার টুকরাগুলো দিয়ে আবার কষাতে হবে। ৩. এবার মাছের সমান ঝোল দিতে হবে। গুড় ও তেঁতুলের মাড় দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। যখন গামাখা ঝোল থাকবে তখন পাঁচফোড়ন ও শুকনা মরিচের সম্বরা দিয়ে পরিবেশন।
ডালে ইলিশের মাথা–লেজ
উপকরণ :১. মুগ ডাল ১ কাপ,২. ইলিশের মাথা ও লেজ ২ পিস,৩. হলুদগুঁড়া আধা চামচ,৪. কাঁচা মরিচ ৬-৭টা,৫. লবণ পরিমাণমতো,৬. পেঁয়াজকুচি আধা কাপ,৭. রসুনকুচি ১ টেবিল চামচ,৮. আদা বাটা ১ চা-চামচ,৯. রসুন বাটা ১ চা-চামচ,১০. সয়াবিন তেল আধা কাপ,১১. লেবুর পাতা ৬-৭টা।
প্রণালি :> মুগ ডাল হালকাভাবে ভেজে ১৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখতে হবে। পাত্রে তেল দিয়ে পেঁয়াজ ও রসুনের বাগার দিয়ে সব বাটা ও গুঁড়া মসলা ১ কাপ পানি দিয়ে কষাতে হবে। মসলা কষানো হলে ইলিশের মাথা দিয়ে কষিয়ে একটু পর ডাল দিয়ে আবার ২-৩ মিনিট কষিয়ে আড়াই কাপ গরম পানি দিতে হবে। ঢেকে রান্না করতে হবে। ডাল সেদ্ধ হলে লেবুপাতা ২ টুকরা করে মাছে দিতে হবে। ২-১ মিনিট চুলায় রেখে নামাতে হবে। এবার টাটকা টাটকা পরিবেশন করুন।
ইলিশ পোলাও
উপকরণ :১. ইলিশ মাছ বড় ১টি,২. পোলাওয়ের চাল ২ কাপ,৩. আদা বাটা ২ চা-চামচ,৪. পেঁয়াজ বাটা ২ টেবিল চামচ,৫. পেঁয়াজকুচি সিকি কাপ,৬. বেরেস্তা সিকি কাপ,৭. কাঁচা মরিচ ১০-১২টি,৮. টক দই আধা কাপ,৯. তেল আধা কাপ,১০. দারুচিনি ২ টুকরা,১১. এলাচ ৪টি,১২. তেজপাতা ১টি,১৩. লবণ পরিমাণমতো,১৪. চিনি ১ চা-চামচ,
১৫. লেবুর রস ২ টেবিল চামচ।
প্রণালি :> মাছ গাদা-পেটিসহ বড় টুকরা করে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিন। সামান্য আদা-পেঁয়াজ বাটা, টক দই, লবণ মাখিয়ে ৩০ মিনিট রাখুন। পোলাও রান্নার হাঁড়িতে তেল গরম করে পেঁয়াজ ভেজে বাকি বাটা মসলা ভুনে মাছ দিয়ে অল্প আঁচে ১৫ মিনিট রান্না করতে হবে। মাঝে একবার মাছ উল্টিয়ে দিন। তেলের ওপর এলে হাঁড়ি থেকে মাছ উঠিয়ে ৪ কাপ গরম পানি ও গরমমসলা দিয়ে ফুটে উঠলে আগে থেকে ধুয়ে রাখা চাল ও লবণ দিয়ে ঢেকে দিন। লেবুর রস দিয়ে চিনি দিয়ে কয়েকবার নেড়ে দিন। মৃদু আঁচে ১৫-২০ মিনিট রেখে হাঁড়ি থেকে কিছু পোলাও তুলে মাছ, মরিচ, কিছু বেরেস্তা দিয়ে সাজিয়ে বাকি পোলাও দিয়ে ঢেকে দিন। কিছু বেরেস্তা ছিটিয়ে দিয়ে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে ১০-১৫ মিনিট দমে রেখে পরিবেশন করুন।
লেবুপাতায় ইলিশ ভুনা
উপকরণ :১. ইলিশ মাছ (মাথা, ডিমসহ) ছোট করে কাটা ২ কাপ,২. লেবুপাতা ৫-৬টি,৩. পেঁয়াজকুচি ১ কাপ,৪. কাঁচা মরিচ ফালি ৫-৬টি,৫. হলুদগুঁড়া আধা চা-চামচ,৬. মরিচগুঁড়া ১ চা-চামচ,৭. জিরাগুঁড়া আধা চা-চামচ,৮. তেল আধা কাপ,৯. লবণ পরিমাণমতো,১০. লেবুর রস ১ টেবিল চামচ,১১. চিনি ১ চা-চামচ,১২. টমেটো সস ২ টেবিল চামচ।
প্রণালি :> তেল গরম করে পেঁয়াজ ভাজতে হবে। পেঁয়াজ নরম হলে সমস্ত মসলা কষিয়ে টমেটো সস দিয়ে মাছ দিয়ে কিছুক্ষণ ভুনে ১ কাপ পানি দিতে হবে। ঝোল কমে এলে চিনি, লেবুর রস, কাঁচা মরিচ, লেবুপাতা পর্যায়ক্রমে দিয়ে নামাতে হবে।
No comments:
Post a Comment
পোস্টটি ভালো লাগলে কমেন্ট করুন। আপনার কোন তথ্য সংরক্ষণ বা প্রকাশ করা হবে না। আপনি Anonymous বা পরিচয় গোপন করেও কমেন্ট করতে পারেন।