পূজার্চ্চনার নিয়ম এবং পদ্ধতি - UHC বাংলা

Untitled+2

...মুক্ত চিন্তায় বিশ্বাসী একটি গ্লোবাল বাংলা প্লাটফর্ম!

Home Top Ad

পূজার্চ্চনার নিয়ম এবং পদ্ধতি

পূজার্চ্চনার নিয়ম এবং পদ্ধতি

যে ভাবে কৃষ্ণ নাম (মালা) জপ করবেন?

Mahatma-Prabhu-on-Whats-your-story


হাতের তালুতে দু-এক ফোঁটা জল নিয়ে ‘ওঁ বিষ্ণু’ মন্ত্রে পান করবেন। মোট তিন বার এইভাবে জল পান করতে হবে। তারপর করজোড়ে বলবেন—
ওঁ তদ্বিষ্ণোঃ পরমং পদং সদা পশ্যন্তি সূরয়ঃ দিবীব চক্ষুরাততম্।
ওঁ অপবিত্রঃ পবিত্রো বা সর্বাবস্থাং গতোঽপি বা।
যঃ স্মরেৎ পুণ্ডরীকাক্ষং স বাহ্যাভ্যন্তরঃ শুচিঃ।।
‘ওঁ বিষ্ণু’‘ওঁ বিষ্ণু’‘ওঁ বিষ্ণু’

মস্তকে তুলসী রেখে বলবেন :

নমঃ তুলসী দর্শনে পুণ্য
স্পর্শনে পাপ নাশন
স্মরণে তির্থানি
ভক্তিমে মুক্তি লক্ষণ নমঃ

গুরু প্রনামঃ

ঔঁ অখণ্ডমণ্ডালাকারং ব্যাপ্তং যেন চরাচরম্।
তৎপদং দশি‘তং যেন তস্মৈ শ্রীগুরুবে নমঃ।।১
অঞ্জানতিমিরান্ধস্য ঞ্জানাঞ্জন শলাকায়া।
চক্ষু রুল্মীলিতং যেন তস্মৈ শ্রীগুরুবে নমঃ।।২. গুরু ব্রক্ষা
গুরু বিষ্ণু গুরুদেবো মহেশ্বরঃ। গুরুঃ সাক্ষাৎ পরং ব্রক্ষ
তস্মৈ শ্রীগুরুবে নমঃ।

শ্রী কৃষ্ণ প্রনামঃ

হে কৃষ্ণ করুণা সিন্ধু দীনবন্ধু জগৎপতে।
গোপেশ গোপীকা কান্ত রাধা কান্ত নমহঃস্তুতে ।।

শ্রী রাধারানী প্রণামঃ

তপ্ত কাঞ্চন গৌরাঙ্গীং রাধে বৃন্দাবনেশ্বরী।
বৃষভানু সূতে দেবী প্রণমামি হরি-প্রিয়ে।।
মালা জপ আরম্ভের মন্ত্রঃ-
অবিঘ্ন করু মালে, ত্বং হরি নাম-জপেষু চ।
শ্রীরাধা কৃষ্ণয়োর্দাস্যং দেহি মালে, তু প্রার্থয়ে।।
অর্থঃ- হে মালে তোমাতে হরি নাম জপ করিতেছি আমার সর্ব্ব বিঘ্ন দূরকর এবং শ্রীরাধা কৃষ্ণের দাস্য দান কর, এই প্রার্থনা করিতেছি।
….
মন্ত্র জপ ১০৮ বার
হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে ।।
…..
মালা জপান্তে নিন্মরুপ জপ সমর্পণ করিতে হয়ঃ-
গুহাতিগুহ গোপ্তা ত্বং গৃহাণাস্মং কৃতং জপং ।
সিদ্বি ভবতু-মে দেব ত্বৎ প্রসাদাৎ জনার্দ্দন।।
অর্থঃ হে পরম দেব, পরম অভিষ পরমপ্রিয় শ্রীকৃষ্ণ তুমি গুহ্য ও অতি গুহ্য বস্তুকে রক্ষা কর। অতএব আমার এই নাম জপ তুমি গ্রহন কর। হে দেব তোমার প্রসাদে আমার সর্বসিন্ধ লাভ।
….
গীতায় স্মরণীয় নামগুলি জপ করিবেনঃ
ঔঁ গঙ্গা, গীতা, সাবিত্রী,সীতা, সত্ত্বা, পতিব্রতা,
ব্রহ্মবলি, ব্রহ্মবিদ্যা,ত্রিসন্ধ্যা, মুক্তি-গেহেনী,
অর্ধমাত্রা, চিদানন্দা,ভবঘ্নী, ভ্রান্তী নাশিনী,
বেদত্রয়ী, পরানন্দা,তত্ত্বার্থ, জ্ঞানমঞ্জরী।।
….
সব শেষে ভুল ত্রুটির জন্য ক্ষমা প্রাথনা :
পাপহং পাপকর্মাহং পাপাত্মাহ পাপসম্ভবো
ত্রাহিমাং পুন্ডরিকাক্ষং সর্ব পাপ হর হরি।।
ভালো লাগলে শেয়ার করবেন। ভুল ত্রুটি ক্ষমা করবেন , নিতাই গৌর হরিবল


নারায়ণ পূজোর নিয়ম


narayan-pujo

সত্যনারায়ণ পূজার সঙ্গে বাঙালী অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। একবারও সত্যনারায়ণ হয়নি এরকম বাঙালী বাড়ি খুঁজে পাওয়াই মুশকিল। বাড়িতে কোন শুভকাজের আগে বা পরে সত্যনারায়ণ পূজা বা নতুন বাড়িতে প্রবেশের আগে সত্যনারায়ণ পূজা, যেকোনো শুভ কাজেই নারায়ণ দেবতার আশীর্বাদ আমাদের চাইই চাই। কিন্তু যারা সত্যনারায়ণ পূজার নিয়মবিধি সেভাবে জানেন না, তাঁদের জন্যই থাকল সত্যনারায়ণ পূজার কিছু নিয়মবিধি।

নারায়ণ পুজো
পূজা শুরুর আগের কিছু নিয়ম
নারায়ণ পূজায় তেমন বাহুল্য নেই বললেই চলে।তাই এই পূজার আয়োজন খুব সহজ। যে যার সাধ্য মত আয়োজন করে। যেকোনো পূর্ণিমার তিথিতেই এই পূজা করা যায়। অনেকে বাড়ির পরিবেশ শুদ্ধ রাখতে, প্রতিটা বড় পূর্ণিমাতেই পূজা করে থাকেন।

পূজার আগের নিয়ম বলতে, সবচেয়ে আগে পূজার স্থান ভালোভাবে পরিষ্কার করে রাখুন। পরিষ্কার করে যেখানে ঘট পাতবেন, সেখানে আলপনা দিয়ে দিন। সুন্দর করে ফুল দিয়ে সাজিয়ে দিন। ঘটে আমপাতা, শিষ ডাব দিন। অবশ্যই ঘটে ও ডাবে স্বস্তিক চিহ্ন এঁকে দেবেন। বিজোড় সংখ্যক আমপাতা রাখবেন। এতে সিঁদুরের ফোঁটা দেবেন।

এরপর নৈবেদ্য সাজিয়ে দেবেন। একটি থালায় তিনটি জায়গায় একটু করে চাল, ও তার সঙ্গে কলা, বাতাসা, অন্যান্য ফল, তার ওপর সিকি মানে কয়েন, পঞ্চ শস্য এসব দিয়ে সাজান। পঞ্চ শস্য মানে পাঁচ রকম শস্য। এই ভাবেএকটি থালায় তিনটি ও আরেকটি থালায় পাঁচটি নৈবিদ্য সাজিয়ে রাখুন।

সিন্নির জন্য একটি গামলায় ময়দা, গুড়, দুধ, খোয়া ক্ষীর, একটু নারকেল কোরা, কাজু, কিশমিশ ঠাকুরের সামনে রাখবেন। পূজার পর ঠাকুরমশাই সিন্নি তৈরি করবেন। এছাড়াও নারায়ণের ছবির দু’পাশে দুটো পান পাতা রাখুন। এর ওপর একটা সুপারি, একটা কয়েন, একটা কলা রাখুন।

পূজা শুরু
নারায়ণ পূজার জন্য প্রথমে নারায়ণ শিলা স্থাপন করতে হয়। চিন্তা নেই, সেটি আপনার ঠাকুরমশাই সঙ্গে করে আনবেন। এবং ইনিই প্রতিস্থাপন করবেন। সেদিন সারাদিন ওই নারায়ণ শিলা থাকবে। পরদিন ঠাকুর মশাই সুতো কেটে সেটি নিয়ে চলে যাবেন। নারায়ণ শিলা স্থাপন করে ও নারায়ণ দেবতাকে প্রণাম জানিয়ে পূজা শুরু করা হয়। সঙ্গে মা লক্ষ্মীকেও ফুল দেবেন, প্রণাম জানাবেন।

এরপর আপনার সমস্ত আয়োজন তাঁকে নিবেদন করার পালা। এই সাধারণ পূজার পর অঞ্জলি। অঞ্জলি শেষ হয়ে গেলে হোম। হোম-যজ্ঞের জন্য ছোট ছোট করে বেশ কয়েকটি হোমের কাঠ,একটি পাত্রে ঘি, ৫১টি বেলপাতা, একটি লাল চেলি কাপড়, একটু দুধ একটি কলা ও একটি সন্দেশ এবং হোমকুণ্ড রেডি রাখবেন। যজ্ঞ শেষে দুধ ঢেলে যজ্ঞ শেষ হবে। এবং সবাই যজ্ঞের টিপ পড়বেন। এইসব কিছু দশকর্মার দোকানে পেয়ে যাবেন। এটিই হল নারায়ণ পূজার নিয়ম।

তাহলে দেখলেন নারায়ণ পূজার আয়োজন করা কত সহজ। শুধু শুদ্ধ, শান্ত মনে পূজার আয়োজন করুন। আয়োজন সামান্য হলেও দেবতা নারায়ণের আশীর্বাদ প্রবেশ করবে আপনার ঘরে।


লক্ষ্মী পূজার বিধি জেনে নিন



lakmsi-puja

সুস্মিতা দাস ঘোষ

উমা চলে যাবার পর খুব মন খারাপ। কিন্তু মন খারাপের সময় কই ,তার পরই তো মা লক্ষ্মী আসেন আমাদের ঘরে। তাকে নিয়েই শুরু হয়ে যায় তোড়জোড়। আপনার বাড়িতেও নিশ্চয়ই হচ্ছে এবার? কিন্তু যারা এবছর প্রথমবার লক্ষ্মীর ঘট পাতছেন, তারা কি পূজার নিয়মবিধি সঠিক ভাবে জানেন? না জেনে থাকলে আজকের লেখা পড়ুন।

লক্ষ্মী পূজার বিধি
পূজার আগের কিছু সাধারন নিয়ম
সাধারণত কোজাগরী পূর্ণিমার রাতে সারারাত জেগে থাকার বিধি আছে। এই পূজার সঙ্গে কৃষকদের একটা বড় সম্পর্ক রয়েছে। তাই শোনা যায় সারারাত জেগে তারা ওইদিন শস্য পাহাড়া দেয়। সঙ্গে মার কাছে আশীর্বাদ চেয়ে নেওয়া হয়। আবার অনেকে মনে করেন, লক্ষ্মী দেবী চঞ্চলা তাই সারারাত জেগে তাকে পাহাড়া দেওয়া হয়, যাতে তিনি পালিয়ে না যান। এই কথা মা ঠাকুমাদের মুখে প্রায়ই শোনা যায়।

লক্ষ্মীদেবী ধনসম্পদ তাকেই দেন যে তার পুরো মর্যাদা দেয়। যে সেই ধনসম্পদ সমাজের কল্যাণে কাজে লাগায়। তাই লক্ষ্মীদেবীর আরাধনা অত্যন্ত শুদ্ধ মনে করতে হয়। মা লক্ষ্মী অল্পেই খুশী হন। তাই এই পূজায় খুব একটা বাহুল্য নেই। যে যার সাধ্যমত পূজা করে। তবে পূজার আগে পূজার স্থান একদম পরিষ্কার করে নিন। তারপর সুন্দর করে আলপনা দিয়ে দিন। প্রতি ঘরের দরজায়, পূজার স্থানে লক্ষ্মীর পা অবশ্যই আঁকবেন। সেইদিন আলপনা মুছবেন না। তারপর পূজার জায়গা সুন্দর করে ফুল দিয়ে সাজিয়ে, ধূপ, ধুনো, প্রদীপ জালিয়ে দিতে হয়।

laksmi-panchali

পূজা শুরুর নিয়ম
সব আয়োজন পূর্ণ এবার পূজা শুরু। শুরুর আগে গঙ্গা জল ছিটিয়ে দিন নিজের ও সকলের মাথায় ও পূজার স্থানে। তারপর নারায়ণকে মনে মনে স্মরণ করে পূজা শুরু করুন। পূজার স্থানে একটি তামার পাত্রে জল রাখুন। এই জল সূর্য দেবতাকে অর্পণ করার জন্য। তিনি সকল শক্তির উৎস। তাকে ছাড়া পৃথিবী অন্ধকার। তাই তাকে জল দেওয়া বাঞ্ছনীয়। তামার পাত্রে জল ঢালতে ঢালতেই সূর্যদেবতাকে স্মরণ করুন।

এরপর ঘট স্থাপনের পালা। মাটির একটি গোল ডেলা মত করে নিন, সমান করে নিন। তার ওপর ঘট বসান। এবং ঘটের সামনে একটু ধান ছড়িয়ে দিন। ঘটে স্বস্তিক চিহ্ন আঁকুন সিঁদুর দিয়ে। ঘটের ওপর আমের পাতা রাখুন। পাতার সংখ্যা যেন বিজোড় হয়। আর পাতার ওপর তেল সিঁদুরের ফোঁটা দেবেন। ঘটে গঙ্গাজল দিয়ে তার ওপর আমের পাতা রাখুন। পাতার ওপর একটা হরিতকী, ফুল, দুব্বো, সব দিয়ে ঘট সাজান।

দেবীকে আহবান
লক্ষ্মী পাঁচালী
ঘট স্থাপনের পর মাকে প্রণাম করার পালা। ধ্যান মন্ত্রে মা কে প্রণাম করুন। লক্ষ্মী পাঁচালীর বইয়ে এই মন্ত্র পাবেন। এই বই যেকোনো দশকর্মার দোকানে পেয়ে যাবেন। তবে এই মন্ত্র উচ্চারন একটু শক্ত। তাই যদি সঠিক উচ্চারন করতে না পারেন তাহলে মাকে মনে মনে স্মরণ করে প্রণাম জানাবেন।
মাকে প্রণাম করে এবার আহবান জানান। আহবান মন্ত্রও বইয়ে দেওয়া থাকে। না জানলে মাকে মনে মনে আহবান জানান। হাত নমস্কার করে চোখ বন্ধ করে, বলুন এসো মা আমার গৃহে প্রবেশ কর। আমার গৃহে অধিষ্ঠান কর। আমার এই সামান্য আয়োজন, নৈবিদ্য গ্রহণ কর মা। এইভাবে মাকে আহবান জানাবেন।

মা আপনার ঘরে প্রবেশ করছেন তাই মায়ের পা ধুয়ে দিন। মায়ের আঁকা পায়ে জলের ছিটা দিন। তারপর ঘটে আতপচাল, দুব্বো, ফুল ও চন্দন দিন। এরপর একে একে দেবীকে সব অর্পণ করুন। ফল, মিষ্টি যা কিছু আয়োজন করেছেন। তারপর ধূপ ধুনো দিন। অর্পণ করার পর এবার পুষ্পাঞ্জলি। হাতে ফুল নিয়ে পুষ্পাঞ্জলি মন্ত্র তিনবার উচ্চারন করুন। তারপর দেবীর বাহনকে ফুল দিন। এবং নারায়নকে স্মরণ করে ঘটে ফুল দিন। ও দেবতা ইন্দ্র ও কুবেরকে স্মরণ করে ঘটে ফুল দিন। তারপর দেবীকে প্রণাম করুন। এরপর সবশেষে লক্ষ্মীদেবীর পাঁচালী পড়ে পূজা শেষ করুন।

তবে কয়েকটি কথা মাথায় রাখবেন। লক্ষ্মীদেবীর পূজায় কাঁসর ঘণ্টা এসব বাজাবেন না। এগুলিতে দেবী অসন্তুষ্ট হন। শুধু শাঁখ বাজান আর দেবীর ঘটে তুলসীপাতাও দেবেন না। আর দেবেন না লোহার বাসন। ব্যাস এই কয়েকটি বিষয় মাথায় রেখে শুদ্ধ মনে শুরু করে দিন পূজা। হোকনা আয়োজন সামান্য শুধু মন শুদ্ধ থাকলেই দেবী আসবেন ঘরে।


মহাদেবের পুজোর নিয়মাবলী


26167054_1425513627571183_5281592974350111594_n
শিব ঠাকুরের পুজো করলে মনের মত বর জুটবে—এই কথা আমি, আপনি বা প্রায় সকল মহিলারাই ছোটবেলা থেকে শুনে এসেছেন| কেউ পুজো করে নিশ্চয়ই ফল স্বরূপ মনের মত বরটিও পেয়ে গিয়েছেন! কিন্তু শুধু মনের মত বর ছাড়াও যদি আপনি মহাদেবকে তুষ্ট করতে পারেন তাহলে কিন্তু জীবনে সকল আশাই আপনার পূর্ণ হবে|
কেমন পুজো শিবের পছন্দ?
দেবাদিদেব মহাদেবকে তুষ্ট করার জন্য কিন্তু মোটেও পুজোর জাঁক-জমক বা অতি আড়ম্বরপূর্ণ ব্যবস্থাপনার প্রয়োজন হয় না। কারণ মহাদেব খুব অল্পেই খুশি হন| শুদ্ধ মনে ভক্তি ভরে ডাকলেই তিনি আপনার প্রার্থনা শুনতে পাবেন। কিন্তু আপনার মন যদি কলুষিত হয় এবং ভক্তির অভাব হয় তাহলেই কিন্তু বিপদ। কারণ এমনিতে খুব শান্ত এই ভগবান যদি রেগে গিয়ে বা অসন্তুষ্ট হয়ে তাঁর তৃতীয় নয়ন প্রজ্জ্বলিত করেন, তাহলেই বিশ্ব-সংসার ছারখার হয়ে যাবে!

26219201_1425513690904510_3390625559563075279_n

তাই বলছি আপনি যদি মহাদেবের বন্দনা করতে চান, তাহলে আজকের লেখাটি পড়ে জেনে নিন ঠিক কীভাবে আপনি মহাদেবের পুজো করবেন|

পুজোর সামগ্রী
আগেই বলেছি মহাদেব বড়ই আড়ম্বরহীন জীবনযাপন করেন। তাই তাঁর পুজোর জন্য শুধু আপনার মনের অপার বিশ্বাস, ভক্তি ও শ্রদ্ধা ছাড়া আর কিছুই চাই না| তবুও কী কী বস্তু আপনার প্রয়োজন হবে এই পুজোর জন্য তা একবার জেনে নিন|

আমরা সাধারণত মহাদেবের মূর্তি পুজো করি না। এক্ষেত্রে শিবলিঙ্গকেই তাঁর প্রতিরূপ হিসেবে পুজো করা হয়| তাই আপনিও যদি আপনার বাড়িতে শিব পুজো করতে চান সেক্ষেত্রে শিবলিঙ্গ আপনার প্রয়োজন হবে| এছাড়া চাই বেল পাতা| মহাদেবের সবথেকে প্রিয় বস্তু হল এই বেল পাতা| শুধু এই দিয়েই ভক্তি ভরে ডাকলে আপনি মহাদেবকে তুষ্ট করতে পারবেন|

তামার বা পাথরের বাটির প্রয়োজন হবে, কারণ শুধু মাত্র এই দুটি পাত্রেই শিবলিঙ্গটি স্থাপন করা হয়| এছাড়া কোশাকুশি,দীপ, ধূপ, শিবলিঙ্গটিকে স্নান করানোর জন্য একটি ঘটিতে জল ও অপর একটি ঘটিতে কাঁচা দুধ, সাদা চন্দন, পানীয় জল, নৈবেদ্য এবং প্রসাদ দেওয়ার জন্য ছোটো থালা এবং গ্লাস লাগবে।

বিষ্ণু মন্ত্র পাঠ
প্রথমে স্নান করে পুজোর স্থান পরিষ্কার করে দীপ-ধূপ জালিয়ে পুজোর আসন পেতে পুজোয় বসতে হবে| মনে রাখবেন আপনার শিবলিঙ্গ যেন উত্তর দিকে মুখ করে বসানো থাকে| প্রথমে আসনে বসে মহাদেব ও আদি শক্তি অর্থাৎ দেবী দুর্গার উদ্দেশ্যে প্রণাম জানাতে হবে| এরপর আপনার ইষ্ট দেবতাকে স্মরণ করে ইষ্ট মন্ত্র জপ করতে হবে| এরপর বিষ্ণু মন্ত্র উচ্চারণ করে পুজো আরম্ভ করতে হবে|

জল শুদ্ধি
শিবলিঙ্গের সামনে কোশাকুশিতে জল রেখে আপনাকে জল শুদ্ধি করতে হবে| কারণ এই জল পুজোর সামগ্রীর শুদ্ধিকরণের কাজে এবং পুজোর কাজে ব্যবহৃত হবে| ঠাকুরের আসনের সামনে আপনার হাতের বাঁ দিকে কোশা রেখে তাতে ডান হাতের মধ্যমা অঙ্গুলিটি স্পর্শ করিয়ে মন্ত্র উচ্চারণ করে সমগ্র তীর্থকে জলে আগমনের প্রার্থনা জানিয়ে জলকে শুদ্ধ করা হয়| এবার একটি ফুলে সাদা চন্দন লাগিয়ে তা দিয়ে শুদ্ধ জল নিজের মাথায় ছিটিয়ে নিন এবং সমগ্র পুজো সামগ্রীতে ছিটিয়ে নিন| এতে সব শুদ্ধ হয়ে যাবে|

স্নান
এরপর শিবলিঙ্গকে স্নান করাতে হবে| যে জলে শিবলিঙ্গের আচমন বা স্নান হবে তাতেও কিন্তু শুদ্ধ জল ছিটিয়ে নিতে হবে| একটি তামার পাত্রে শিবলিঙ্গটি রেখে প্রথমে কাঁচা দুধ এবং তারপর জল ঢেলে শিবলিঙ্গটিকে স্নান করাতে হবে নির্দিষ্ট মন্ত্র উচ্চারণ করে| এরপর শিবলিঙ্গ নির্দিষ্ট তামার বা পাথরের পাত্রে বসাতে হবে|

ধ্যান
এবার কিছুক্ষণ চোখ বন্ধ করে মহাদেবের ধ্যান করে তারপর শিবলিঙ্গের মাথায় সাদা চন্দন মাখা বেল পাতা অর্পণ করতে হবে| এবারে ফুল ও বেল পাতা মহাদেবের চরণে অর্পণ করুন| দীপ ও ধুপ দেখিয়ে ভক্তি মনে মহাদেবের মন্ত্র উচ্চারণ করতে হবে| সব শেষে জল ও প্রসাদ দিয়ে প্রণাম করুন|

দেবাদিদেব মহাদেব হলেন এই জগতের অধিপতি, তাঁর অংশ এই বিশ্বের সব কিছুতেই বর্তমান| তাই আমাদের প্রত্যেকের মধ্যেই ভগবানের অস্তিত্ব বর্তমান| নিজের মনকে শুদ্ধ রাখলে এবং অন্যের প্রতি শ্রধা ও ভালবাসা রাখলেই কিন্তু ভগবান তুষ্ট হন| কোনো জাঁক-জমক বা লোক দেখানো আড়ম্বর না করে নিজের মনের পাপ ও অন্ধকার থেকে বেরিয়ে এসে সহজ সরল মনে ডাকলেই কিন্তু মহাদেবের আশীর্বাদ প্রাপ্তি ঘটবে|

No comments:

Post a Comment

পোস্টটি ভালো লাগলে কমেন্ট করুন। আপনার কোন তথ্য সংরক্ষণ বা প্রকাশ করা হবে না। আপনি Anonymous বা পরিচয় গোপন করেও কমেন্ট করতে পারেন।

অন্যান্য

Post Bottom Ad

আকর্ষণীয় পোস্ট

  • noakhali-1946

    নোয়াখালী গণহত্যা- (৯)

    ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত হবে নোয়াখালী গণহত্যা। আজ নবম পর্ব। উৎখাত পরিবারের জীবন-সমস্যাঃ ধ্বংস্তূপের পর নোয়াখালিপ্রসঙ্গের দ্বিতীয় বেদনাদায়ক স্... Readmore

  • noakhali-1946

    নোয়াখালী গণহত্যা- (৮)

    ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত হবে নোয়াখালী গণহত্যা। আজ অষ্টম  পর্ব। নোয়াখালি ও ত্রিপুরার অংশবিশেষে উপদ্রবের অব্যবহিত পরে গত ১৯শে অক্টোবর বঙ্গীয় প্রে... Readmore

  • noakhali-1946

    নোয়াখালী গণহত্যা – (৭)

    ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত হবে নোয়াখালী গণহত্যা। আজ সপ্তম  পর্ব। বাঙলায় ও বিহারেঃ বাঙলার দাবদাহ লাগিয়া বিহার প্রদেশে যে অশান্তির বহ্নি প্রধ... Readmore

  • %25E0%25A6%25A1%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25B2-%25E0%25A6%25B0%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25A8%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25A8%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25B0-%25E0%25A7%25A7%25E0%25A7%25A7-%25E0%25A6%25B0%25E0%25A7%2587%25E0%25A6%25B8%25E0%25A6%25BF%25E0%25A6%25AA%25E0%25A6%25BF

    ডাল রান্নার ১১টি রেসিপি

     আপনাদের জন্য এখন দেওয়া হচ্ছে একটি অনেক মজার খাবারের রেসিপিগুচ্ছ। এটি হলো হরেক রকমের ডাল বিভিন্নভাবে রান্নার রেসিপি। দেখে নিন ডাল রান্নার ১... Readmore

  • noakhali-1946

    নোয়াখালী গণহত্যা- (৬)

    ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত হবে নোয়াখালী গণহত্যা। আজ ষষ্ঠ  পর্ব। বেসরকারী মহল হইতে এই সকল বিবৃতি যখন প্রকাশিত হইতেছিল তখন সরকারী কর্তৃপক্ষ বসিয়া ... Readmore

  • untitled-1-1591279035819

    Following George Floyd's Death, A Hindu Farmer Died In Police Custody In Bangladesh!

    Police say Nikhil's death was an accident and no complaints were lodged over his death  A farmer, who had his spinal cord broken in three places... Readmore

  • photo_2020-06-14_13-22-16-800x490

    Now is the right time for Hindus to fight for their rights: Sitangshu Guha

    I have wondered about this for some time. My Bangladeshi Hindu brethren want an exemplary and courageous leader to follow, but they are loathed to ... Readmore

code-box

Contact Form

Name

Email *

Message *