আয়ুর্বেদের প্রাচীন গ্রন্থ চরক সংহিতা ৩০০ থেকে ৫০০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে লেখা হয়েছিল। এ বইটিতে মহামারি বা ‘জনপদ ধ্বংসনীয় বিমান’ নামে একটি অধ্যায় রয়েছে। এতে রোগমুক্তি ও সংক্রমণ ঠেকাতে বারবার গরম পানিতে স্নান ও নিজেকে রাসায়নিক দিয়ে পরিচ্ছন্ন রাখা ও রাসায়নিক ওষুধ প্রয়োগের কথা আছে। শুধু তা-ই নয়, খ্রিষ্টের জন্মের প্রায় ৪০০ বছর পরে লেখা আয়ুর্বেদশাস্ত্রের অন্যতম সেরা গ্রন্থ ‘অষ্টাঙ্গহৃদয়’-এ ২১ দিনের লকডাউনের বিষয়টিও স্পষ্ট করা আছে। এতে বলা হয়েছে, যে কোনো বিষের (জীবাণু) প্রভাব কমে ২১তম দিনে। অর্থাৎ, জীবাণু আক্রান্ত রোগীকে ২১ দিন ঘরবন্দি রাখলে সে বিষ আর বাইরে সংক্রমিত করতে পারে না ও একুশতম দিনে এসে বিষের উপশম ঘটে। ফলে, আজকের পৃথিবীর লকডাউনের ধারণাও নতুন নয়।
কল্যাণীর বেঙ্গল ইনস্টিটিউট অব ফার্মাসিউটিক্যাল সায়েন্সের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও আয়ুর্বেদ চিকিৎসক লোপামুদ্রা ভট্টাচার্যের মতে, মহামারি ঠেকাতে রোগীর পুরো পরিবারকে আলাদা করে রাখার রীতি আয়ুর্বেদশাস্ত্রেই রয়েছে। আয়ুর্বেদের আরেক সেরা গ্রন্থ ‘সুশ্রুত সংহিতা’য় বলা হয়েছে, জীবাণু আক্রান্তকে ছোঁয়ার মাধ্যমে, তার হাঁচি-কাশির মাধ্যমে, তার সঙ্গে বসবাস, একই থালায় খাওয়া, একই বিছানায় শোয়ার মতো কাজ করলে সুস্থ মানুষও তার সংস্পর্শে এসে অসুস্থ হয়ে পড়বেন। আরও বলা হয়েছে, উপসর্গগুলো একজনের থেকে অন্যজনে সহজেই ছড়িয়ে পড়তে পারে। তাই সামাজিক দূরত্বের ধারণাটিও এখান থেকেই পাওয়া।
সমকাল অনুসারে লেখা।
No comments:
Post a Comment
পোস্টটি ভালো লাগলে কমেন্ট করুন। আপনার কোন তথ্য সংরক্ষণ বা প্রকাশ করা হবে না। আপনি Anonymous বা পরিচয় গোপন করেও কমেন্ট করতে পারেন।