হিন্দুদের জন্য ন্যায় বিচার চাওয়ার কি কেউ নেই ? - UHC বাংলা

Untitled+2

...মুক্ত চিন্তায় বিশ্বাসী একটি গ্লোবাল বাংলা প্লাটফর্ম!

Home Top Ad

Wednesday, April 10, 2019

demo-image

হিন্দুদের জন্য ন্যায় বিচার চাওয়ার কি কেউ নেই ?

হিন্দুদের জন্য বাংলাদেশ বা পাকিস্তান এমনকি বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ হয়েছে উঠেছে দুঃস্বপ্নের এক মরুভূমি। পাকিস্থানে উঠতি বয়সের হিন্দু মেয়েদের কিডন্যাপ করে জোরপূর্বক ধর্মান্তরিত করা এখন নিত্যদিনের ঘটনা। কিছু দিন আগে আমরা দেখেছি পাকিস্থানে রাভিনা ও রিনার বৃদ্ধ বাবার বুক ফাটানো আহাজারী।মেয়েগুলো হারানোর শোকে মৃত্যু হয় মায়ের।  এমন মর্মান্তিক ঘটনাও হিন্দুদের মনে তেমন দাগ কাটতে পারেনি। ঘটনা এখানেই  থেমে নেই। এর পরও ঘটেছে কয়েকটি কিডন্যাপের ঘটনা। এক জরিপে দেখা যায় পাকিস্থানে মাসে প্রায় ২০টির মতো হিন্দু মেয়ে কিডন্যাপ হয়। এটা আমাদের ব্যথিত করে না। বাংলাদেশে দীর্ঘদিন ধরে একটি ধারণা প্রচলিত ছিল যে হিন্দুদের উপর সব অত্যাচার জামাত-বিএনপি করে। কিন্তু গত কয়েক টার্ম আওয়ামীলীগের আমলে আমরা কি দেখলাম ? যত হামলা হয়েছে তার ৯০% ঘটনায় আওয়ামীলীগ সরাসরি জড়িত। অনেক ক্ষেত্রেই আওয়ামীলীগের মন্ত্রীরা জড়িত। কোন হামলার বিচার হয়েছে ? হয় নাই এবং ধরে নেয়া যায় হবেও না।কারণটা বোধ হয় আপনিও জানেন আমিও জানি।যতদিন পর্যন্ত একজন হিন্দু আরেক জন হিন্দুকে মন থেকে অনুভব করতে না  পারবে ততদিন এই অবস্থা উন্নতি আশা করা অসম্ভব। আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে হিন্দুরা ডিজিটাল ফাঁদের স্বীকার। একটু গন্ধ পেলেই তথাকথিত তৌহিদী জনতা শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর মালা*নের (দুঃখিত শব্দটা না দিয়ে পারলাম না। তাই কিছু অংশ ঢেকে দিলাম। ) গোষ্ঠী উদ্ধার করে সুন্নত আদায় করে। এখন অবশ্য আর গন্ধ লাগছে না।

57068549_1246039312187246_4615169486012547072_n



যে কোন হিন্দুকে টার্গেট করে তার নামে আইডি খুলে দেখানো হচ্ছে সেই তৌহিদী জনতার বিক্ষোপ, আসছে ফাঁসির দাবি, পুড়ছে হিন্দুর বাড়িঘর। উচ্চু শিক্ষিত হিন্দু শিক্ষক কিছু অর্ধ-শিক্ষিত মুসলিমের ষড়যন্ত্রে ক-ব-ঠ তৌহিদী জনতার রোষে পড়ে জেলের ঘানী টানছে। আর রাষ্টই এসবের কলকাঠি নাড়ছে। একজন মন্ত্রী যদি তার গুন্ডা বাহিনীকে বলেন অমুককে খুন করে আয় ! তাহলে বাংলাদেশের মতো দেশে খুন করা কয়েক মিনিটের ব্যাপার মাত্র! হিন্দুদের ক্ষেত্রে ঠিক তাই হচ্ছে। সেই  তথাকথিত তৌহিদী জনতা পাচ্ছে রাষ্ট্রের পূর্ণ নিরাপত্তা।নির্বিগ্নে পোড়াচ্ছে হিন্দুর বাড়ি , আর পুলিশ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছে। তারাও তো লুটের ভাগ পাচ্ছে। সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত একটা চিরাচরিত সত্য বলে গিয়েছেন, "হিন্দু গেলেও লাভ থাকলেও লাভ। গেলে জমি - থাকলে ভোট।" এর  চেয়ে বড়  সত্য বাংলাদেশের হিন্দুদের জন্য আর কিছু হতে পারেনা। 

 আরো দেখুনঃ রমনা কালী মন্দির শেখ মুজিব ও বাংলাদেশ: মুছে ফেলা ইতিহাস! 

 গত কয়েক বছরে আমরা পশ্চিমবঙ্গেও দেখেছি সেখানকার সংখ্যালঘুরা সংখ্যাগুরু হিন্দু ঘরে আগুন দিয়েছে বেশ কয়েক বার। তারা যেখানে সংখ্যাগুরু সেখানেও আগুন দিচ্ছে আবার যেখানে সংখ্যালঘু সেখানেও আগুন দিচ্ছে ! বিষয়টি গভীরভাবে ভাবার সময় এসেছে।
আবারো আসি পাকিস্থান প্রসঙ্গে। পাকিস্তান সৃষ্টিতে জিন্নার পর সবচেয়ে বেশি যার অবদান ছিল তিনি হলেন এই বাংলাদেশের যোগেন মন্ডল।তিনি সমগ্র পাকিস্থানের (পর্ব ও পশ্চিম ) হিন্দুদের সমর্থন জুগিয়েছিলেন পাকিস্থান সৃষ্টিতে। উল্লেখ্য সেই সময় পাকিস্থানের  হিন্দুর সংখ্যা ছিল
মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪০%! যে কোন সমর্থন   বা ভোট ৪০% অনেক বড় কিছু। অথচ ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস সে যোগেন মন্ডলকে মাত্র কয়েক বছর পর প্রাণ বাঁচাতে পাকিস্থান ছেড়ে রাতের আঁধারে ভারতে পালতে হয়। আর সেই পাকিস্তানে হিন্দু জনসংখ্যা এখন মাত্র ১% বা তার কম। বাংলাদেশে এসে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৮% এ। সময়ের সাথে তা যে কমবে তা ভাল ভাবেই অনুমেয়। পাকিস্তানে হিন্দু সংখ্যা ১% হলেও তারা কিন্তু রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় পিছিয়ে নেই। তবু থেমে নেই অত্যাচার।
১৪ জন হিন্দু সাংসদ থাকার পরও কেন হিন্দুদের নির্যাতিত হতে হয়?
 কেন হিন্দুদের জন্য সাংসদে আওয়াজ উঠানোর মত কেউ নেই?  
কেন হিন্দুদের জন্য ন্যায়বিচার চাওয়ার মত কেউ নেই? 
কেন নির্মমতা সইতে না পেরে নীরবে হিন্দুদের দেশ ত্যাগ করতে হয়?
এ প্রশ্নগুলো ছিলো পাকিস্তান এক্সপ্রেস ট্রিবিউন এর একজন সাংবাদিকের। হা, প্রশ্নগুলো আমাদেরও। এর আগে দেখে নেই পাকিস্তানের জাতীয় ও প্রাদেশিক সংসদগুলোতে হিন্দু সাংসদের লিস্ট:

13310322_480467688744416_1405972019242603884_n


 মন্ত্রীঃ ১। জ্ঞান চাঁদ ঈশরানী মন্ত্রীঃ বন ও পরিবেশ, সংখ্যালঘু,আয়কর মন্ত্রণালয়, সিন্ধু প্রাদেশিক পরিষদ।
 ২। মুকেশ কুমার চাওয়া মন্ত্রীঃ তথ্য,বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি,জনস্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, সিন্ধু প্রাদেশিক পরিষদ। সাংসদ (জাতীয় পরিষদ

১। নামঃ ডাঃ দর্শন মাল এলাকাঃ ঘোটকি,সিন্ধু দলঃ পাকিস্তান মুসলিম লীগ
 ২।নামঃ রামেশ কুমার ভাঙ্কওয়ানি। এলাকাঃ থারপারকার,সিন্ধু। দলঃ পাকিস্তান মুসলিম লীগ।
 ৩। নামঃ ভবন দাস এলাকাঃ সাংহার,সিন্ধু দলঃ পাকিস্তান মুসলিম লীগ
 ৪। নামঃ রামেশ লাল এলাকাঃ লারকানা,সিন্ধু দলঃ পাকিস্তান পিপলস পার্টি
৫। নামঃ লাল চান্দ মালহি এলাকাঃ উমরকোট,সিন্ধু দলঃ পাকিস্তান তেহরিক ই ইনসাফ
 ৬। নামঃ সঞ্জয় পেরওয়ানী এলাকাঃ মিরপুরকাস,সিন্ধু দলঃ মুত্তাদিহা কওমী মুভমেন্ট প্রাদেশিক সংসদ সিন্ধু প্রদেশ
 ১। নামঃ চেত্তন মাল আরওয়ানি এলাকাঃ PSM -168 দলঃ পাকিস্তান মুসলিম লীগ(জিন্নাহ)
 ২। নামঃ হরগুন দাস আহোজা এলাকাঃ PSM - 165 দলঃ মুত্তাদিহা কওমী মুভমেন্ট
 ৩। নামঃ লাল চান্দ এলাকাঃ PSM - 162 দলঃ পাকিস্তান পিপলস পার্টি
৪। নামঃ মোহন মাল এলাকাঃ PSM-160 দলঃ পাকিস্তান পিপলস পার্টি
৫। নামঃ মুকেশ কুমার এলাকাঃ PSM - 163 দলঃ পাকিস্তান পিপলস পার্টি
৬। নামঃ পীতান্বর শেওয়ানী এলাকাঃ PSM - 161 দলঃ পাকিস্তান পিপলস পার্টি বেলুচিস্তান প্রদেশ
 ১। নামঃ ঘনশ্যাম দাস মাদওয়ানি বালুচ এলাকাঃ NM - 65 দলঃ জাতীয় পার্টি
 ২। নামঃ সন্তোষ কুমার দাস এলাকাঃ NM - 63 দলঃ পাকিস্তান মুসলিম লীগ !

এরা পাকিস্তানের বিভিন্ন হিন্দু অধ্যুষিত এলাকায় হিন্দুদের ভোটে পাশ করা সাংসদগণ ! এদের মধ্য রামেশ কুমার ভাঙ্কওয়ানি,লাল চান্দ মালহি ছাড়া আর কাউকেই পাকিস্তানি হিন্দুরা হিন্দুদের জন্য কিছু করতে দেখে নি !কিছু কররা তো দূর এরা হিন্দুদের জন্য আওয়াজ টুকু পর্যন্ত করে না ! হিন্দুরা নীরবে দেশ ছাড়ছে অথচ এদের এদিকে নজরটুকুও নেই ! হে হিন্দু নেতারা হিন্দুরা দেশ ছাড়লে আপনাদের নেতাগিরীও শেষ! হিন্দু ছাড়া আর কেউ আপনাদের ভোট দেবে না।এমনকি খ্রিস্টানরাও না ! খ্রিস্টানরা দেশ ছাড়ে না,দেশে খ্রিস্টান সাংসদের সংখ্যা বাড়ছে অথচ হিন্দু সাংসদ কমছে।বর্তমানে পাকিস্তানে খ্রিস্টান সাংসদ ১৬ জন আর হিন্দু সাংসদ ১৪ জন ! বিগত সরকারের আমলের হিন্দু অধ্যুষিত এলাকাগুলো আজ হিন্দু শূন্য হচ্ছে! দেশে প্রতিনিয়ত হিন্দুদের উপর বর্বরতা চালানো হচ্ছে।হিন্দু মেয়েদের ধর্ষণ করে হত্যা করা হচ্ছে! জাতি আজ জানতে চাই ১৪জন হিন্দু সাংসদ থাকা স্বত্তেও কেন হিন্দুদের জন্য আওয়াজ উঠানোর কেউ নেই ?
জাগো হে হিন্দু জাগো,নিজেদের সঠিক নেতাকে চিনে নাও।না পেলে ভোট বর্জন কর।
 পরিশেষে আর একটি কথা বলতে চাই। পাকিস্তানের মতো একটি জঙ্গি দেশে যদি ১৪ জন হিন্দু এবং ১৬ জন খ্রিষ্টান সংসদ/ মন্ত্রী থাকে, বাংলাদেশে কতজন সংখ্যালঘু সংসদ থাকা উচিত ? কোটি কোটি হিন্দুর আত্মত্যাগের বিনিময়ে কি পেল বাংলাদেশ সংখ্যালঘুরা ? বাংলাদেশ সৃষ্টি হওয়ার পর একজন হিন্দু বীরশ্রেষ্ঠের নাম ঘোষণা করেও কেন কেড়ে নেয়া হলো তার উপাধী ? তবে এটাই কি ছিল মুজিব সরকারের হিন্দু-শূন্য বাংলাদেশ গড়ার মেগা-প্লান ? 

অন্যান্য

Post Bottom Ad

আকর্ষণীয় পোস্ট

code-box

Contact Form

Name

Email *

Message *