জার্মানিতে নিরামিষ বিপ্লব ! - UHC বাংলা

UHC বাংলা

...মুক্ত চিন্তায় বিশ্বাসী একটি গ্লোবাল বাংলা প্লাটফর্ম!

ব্রেকিং নিউজ

Home Top Ad

Thursday, December 6, 2018

জার্মানিতে নিরামিষ বিপ্লব !


নিরামিষ ভোজি হওয়ার জন্য আমাদেরকে অনেক সমালোচনা শুনতে হয় মুসলিমদের কাছ থেকে। কিন্তু পশ্চিমা বিশ্বে নিরামিষ ভোজির সংখা দ্রুত হারে বাড়ছে। কোন কুসংস্কারে নয়। বৈজ্ঞানিক ও মেডিকেল কারণে। আজ শুনাবো জার্মানির গল্প ...
জার্মানিতে ক্রমেই ‘ভেগান’ জীবনযাপনের দিকে আগ্রহ বাড়ছে মানুষের৷ প্রশ্ন জাগে, এই ধরনের লাইফস্টাইলের পেছনে স্বাস্থ্যগত নাকি নৈতিক কারণটা প্রধান? কেন মানুষ ভালো-মন্দ, মানে মাছ-মাংস, এমনকি দ...ুগ্ধজাত পদার্থও বর্জন করছেন?
Veganer Metzger

‘‘কাপুচিনো-টা সয়াদুধ না কাঠবাদামের দুধ দিয়ে চাও?’’ আংকে কক্স তাঁর খদ্দেরদের এই ধরনেরই প্রশ্ন করেন৷ তারপর তাঁদের ইচ্ছামত কফি বানিয়ে এগিয়ে দেন৷বনের প্রথম ভেগান ক্যাফের

মালিক কক্স৷ খোলেন ২০১৩ সালের অক্টোবর মাসে৷ এতে কোনো ধরনের প্রাণীজাত খাবার থাকে না৷ ভেগানরা মাছ-মাংস তো বটেই
দুধ-ডিমের মতো প্রাণীজাত কোনো খাবারই স্পর্শ করেন না৷

ভেগান ক্যাফের যাত্রা শুরু:

অনেক দিন ধরেই এ রকম একটি ক্যাফে খোলার ইচ্ছা ছিল আংকে কক্সের৷

নিজে পাঁচ বছর ধরে ভেগান জীবনযাপন করছেন৷ প্রথম দিকে অসুবিধা হতো৷ বাজার করতে ঘণ্টা দুয়েকের বেশি লাগতো৷ প্রতিটি প্যাকেট খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে হতো, প্রাণীজাত কোনো কিছু রয়ে গিয়েছে কিনা৷ ‘‘রেস্টুরেন্টেও একই অবস্থা৷ ওয়েটার ও বাবুর্চিদের সঙ্গে আলোচনা করতে করতে আর শুধু সাইড-ডিশ খেতে খেতে হতাশ হতে হতো৷’’ বলেন কক্স৷

অনলাইন ম্যাগাজিন

ভেগান রেস্টুরেন্টের প্রণোদনা পেয়েছিলেন তিনি ইন্টারনেট থেকে৷ এই অনলাইন ম্যাগাজিনটি জার্মানির ভেগানদের জন্য যোগাযোগের কেন্দ্রবিন্দু৷ ভেগান খাদ্যদ্রব্য, সংশ্লিষ্ট প্রকল্প ও অনুষ্ঠান সম্পর্কে নানারকম তথ্য পাওয়া যায় এই ম্যাগাজিনে৷

কোন ধরনের ভেগান খাদ্যদ্রব্য সুপার মার্কেটে পাওয়া যায়, সে সম্পর্কে অনেকে জানতে চান৷ এই ধরনের আর্টিকেলগুলিতে সবচেয়ে বেশি ক্লিক আসে৷ ‘‘এতে বোঝা যায় ‘ভেগানিজম’ সমাজের কেন্দ্রে এসে পৌঁছেছে৷

বিষয়টি দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে৷’’ বলেন ম্যাগাজিনটির প্রধান সম্পাদক পাট্রিক বল্ক৷

আনলাইন ম্যাগাজিনের লেখকরা নৈতিক বিশ্বাস থেকে ভেগান জীবনধারা বেছে নিয়েছেন৷ দ্বিতীয় পদক্ষেপে তাঁরা স্বাস্থ্যের দিকটি নিয়ে চিন্তাভাবনা করেন৷ এক্ষেত্রে আরো কিছু কারণও রয়েছে৷

বাজার-গবেষণার একটি সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, ভেগানদের একটি বড় অংশই অন্য ধরনের জীবনযাপন বা লাইফস্টাইলের জন্যই প্রাণীজাত খাবার বর্জন করেন৷

‘‘আদতে পশুরক্ষা আন্দোলন থেকে উঠে এসেছে এই জীবনদর্শন৷ এখন অবশ্য সুস্বাস্থ্যের জন্যও অনেকে ছেড়ে দিচ্ছেন প্রাণীজাত খাবার৷ ভেগানিজমকে আকর্ষণীয় ও স্বাস্থ্যকর এক জীবন পদ্ধতি মনে করা হয়৷’’ জানান পাট্রিক বল্ক৷

হামবুর্গ শহরের ভোক্তা সুরক্ষা কেন্দ্রের প্রধান সিলকে শোয়ার্টাউ বলেন, ভেগান হতে হলে নিজের খাবারের ব্যাপারে সংবেদনশীল হতে হবে৷
জার্মানিতে ভেগানদের জীবনযাত্রা
ভেগান বা উদ্ভিদভোজী

কয়েক বছর আগ পর্যন্ত যারা দুধ, ডিম, মাংস খেতেন না তাদের অন্য চোখে দেখা হতো৷ সময় বদলেছে এবং এরই মধ্যে ভেগানদের সংখ্যা বেড়েছে অনেক৷ ভেগানরা শুধু নিরামিষাশী নন, তাঁরা প্রাণিজাত কোনো কিছু খান না৷ ভেগানরা শুধু স্বাস্থ্যগত কারণেই উদ্ভিদভোজী হচ্ছেন তা নয়, পরিবেশ রক্ষায়ও তাঁরা অবদান রাখতে চান৷ ভেগানদের জন্য রেস্তোরাঁ, সুপার মার্কেট, রান্নার বই, রান্নার কোর্স এসব বর্তমানে খুবই চলছে৷

সম্প্রতি তাঁর টিম প্রক্রিয়াজাত ভেগান খাদ্যদ্রব্য নিয়ে এক মার্কেট চেক চালান৷ ফলাফল মোটামুটি ভালো হলেও কিছু খাবার অতিরিক্ত তৈলাক্ত ও লবণাক্ত বলে প্রমাণিত হয়েছে৷

‘‘ইন্টারনেটে এ ব্যাপারে একটি জোরালো আলোচনা হয়৷ প্রতিক্রিয়াটা যে সর্বক্ষেত্রে ইতিবাচক তা বলা যায় না৷ অনেকে লিখেছেন স্বাস্থ্যের দিকটা তাদের কাছে গৌণ৷ পশুনির্যাতন ও পশুহত্যা না হলেই হলো৷’’ জানান শোয়ার্টাউ৷ এমনিতেই ভেগানরা প্রক্রিয়াজাত খাবার খুব কমই খান৷ সুষম খাদ্য তাঁদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ৷

‘‘ভেগান জীবনযাপন মানেই যে স্বাস্থ্যকর তা বলা যায় না৷ যেমন বলা যায় না বেশি মাংস খাওয়ার অর্থই হলো অস্বাস্থ্যকর৷’’ বলেন পুষ্টি বিশেষজ্ঞ শোয়ার্টাউ৷

আগ্রহ বৃদ্ধি পাচ্ছে

অবশ্য তিনিও লক্ষ্য করেছেন ভেগনিজমের ব্যাপারে সমাজের আগ্রহ বৃদ্ধি পাচ্ছে৷ ২০ বছর আগেও এটা ভাবা যায়নি৷ তাঁর ভাষায়, ‘‘৮০-এর দশকে ভেগানরা ছিলেন এক প্রান্তিক গোষ্ঠী৷ এমনকি মাঝে মাঝে অপুষ্টিতেও আক্রান্ত হতেন তাঁরা৷ কেননা তখন পুষ্টিকর বিকল্প খাবার পাওয়া সহজ ছিল না৷’’ আজ তো ভোক্তা সুরক্ষা কেন্দ্রগুলিতে প্রতিদিনই ভেগান খাদ্যের ব্যাপারে জানতে চান অনেকে৷

তবে খদ্দেরদের খাদ্যাভ্যাস যাই হোক না কেন৷ কিংবা তাঁরা যে ধরনের জীবনদর্শনেই বিশ্বাস করুন না কেন আংকে কক্স-এর ক্যাফে ‘মায়েস’-এ সেটা কোনো বিষয়ই নয়৷ অনেক খদ্দেরই জানেন না যে, তাঁদের সামনের মেন্যুটিতে শুধু ভেগান-খাবার ও পানীয়ই রয়েছে৷ ক্যাফের মালিকও এমনটি চান৷ ‘মায়েস’-এ সবাই স্বাগত৷
  Courtesy: DW.DE

7 comments:

পোস্টটি ভালো লাগলে কমেন্ট করুন। আপনার কোন তথ্য সংরক্ষণ বা প্রকাশ করা হবে না। আপনি Anonymous বা পরিচয় গোপন করেও কমেন্ট করতে পারেন।

অন্যান্য

Post Bottom Ad

আকর্ষণীয় পোস্ট

code-box