#গান্ধীকোম্পানির সাথে #নেতাজিরবিরোধ কি ভাবে শুরু হলো ? কিভাবে তারা নেতাজির সঙ্গে নিঃকৃস্ট রাজনীতি করেছিলেন? একজন বীর দেশপ্রেমীকের সাথে যে আচরণ গান্ধী করেছিলেন তাতে তাকে নিঃসন্দেহে দেশবিরোধী ও গণতন্ত্রের শত্রু বলা যেতে পারে।
নেতাজির পেছনে গান্ধী ও তার চ্যালাদের চক্রান্তকারী রাজনীতি নিয়ে আমি বিপ্লব আবার আপনাদের সামনে এলাম।
নেতাজির পেছনে গান্ধী ও তার চ্যালাদের চক্রান্তকারী রাজনীতি নিয়ে আমি বিপ্লব আবার আপনাদের সামনে এলাম।
অসুস্থ জেলবন্দী সুভাষ ১৯৩১ সালে তাঁর স্বাস্থ্য উদ্ধারের ইউরোপে যান। সেখানে তাঁর স্টোন অপারেশনও হয়েছিল। নেতাজির আসল উদ্দেশ্য ছিল ব্রিটিশ বিরোধী প্রচার ও ভারতের স্বাধীনতার বৈদেশিক সমর্থন। জার্মানি থাকাকালীন সরকারের অনেক উচ্চপদস্থ কর্তাদের সাথে তাঁর গভীর সম্পর্কও স্থাপন হয়েছিল। ব্রিটিশ ঘোষনা করেছিলেন সুভাষ বিদেশে থাকুন কিন্তু যদি দেশে ফেরে তখনই গ্রেপ্তার করা হবে।
ইউরোপে প্রায় ৫ বছরেরও বেশি কাটানোর পর সুভাষ যখন শুনতে পায় যে জিন্না ও মুসলিম লীগ এবং ব্রিটিশ দেশকে ভাগ করার ষড়যন্ত্র করছে তখন আর বিদেশে থাকতে পারে না। দেশে এলেই তাঁকে ব্রিটিশ গ্রেপ্তার করবে, তখন সুভাষ বলেছিলেন "বিদেশের মুক্ত হাওয়ার চেয়ে দেশের অন্ধকার কারাগারও ভালো।"
যাই হোক, ১৯৩৭ সালে তিনি দেশে ফেরেন এবং ব্রিটিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করতে যান। তখন সারা দেশে অতিজনপ্রিয় সুভাষকে গ্রেপ্তারের বিরুদ্ধে জনগণ ক্ষোভে ফেটে পরে এবং ব্রিটিশ তাঁকে ছাড়তে বাধ্য হয়।
মাত্র ৪১ বছর বয়সে ১৯৩৮ সালে সুভাষ কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচিত হন বিনা প্রতিদন্দীতায় সর্বসম্মতিক্রমে। কিন্তু সভাপতির ভাষনেই গান্ধী ব্রিগেড ও পুঁজিপতিরা চিন্তায় পরে যান। ভাষনে তিনি জমিদারি প্রথা উচ্ছেদের ডাক দেন, এমনকি ব্রিটিশকে চরমপত্র দেবার কথাও ঘোষনা করেন। ছয় মাসের মধ্যে দেশ না ছাড়লে শুরু হবে বিদ্রোহ। এই ঘোষনায় ব্রিটিশ তো বটেই ব্রিটিশের চামচে গান্ধীপন্হীরাও চিন্তায় পরে যান এবং জমিদার ও পুঁজিপতিরা গান্ধীর দলে যোগদান করে দেশবাসিকে দেখাতে চান যে তারাও স্বাধীনতা সংগ্রামী। সুভাষের জনপ্রিয়তায় গান্ধী বুঝে যান যে তার নেতৃত্ব সংকটে। তাই ঘোরতর সুভাষ বিরোধী হয়ে ওঠেন এবং তার আভ্যন্তরীণ আসল কূটিল চরিত্র জেগে ওঠে।
১৯৩৯ সাল, চাণক্য নীতি বলে "শত্রুর শত্রুই আমার মিত্র"। তাই সুভাষ চাইছিলেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সুযোগ নিয়ে ব্রিটিশের শত্রুদের সাথে মিলে আঘাত হানতে, যাতে এই সুযোগে মাতৃভূমিকে স্বাধীন করা যায়। আর গান্ধী বললেন "ব্রিটিশের দূর্দিনে তাদের বিব্রত করা উচিত নয়, তাই ভারতের স্বাধীনতা এখন আমি চাইছি না। ব্রিটিশই যদি স্বাধীনতা হারায় তবে ভারতের স্বাধীনতা পেয়ে কি লাভ? তাই ব্রিটিশকেই সাহায্য করা উচিত"!
গান্ধী ভারতীয় জাতীয়তাবাদের পক্ষে চরম বিষাক্ত ছিলেন,আছেন ও চিরকাল থাকবেন। একে যারা সন্মান করে তারাও চরম বিষাক্ত। আমি বলছি না ইতিহাস বলছে।
১৯৩৯ এ সুভাষ অনুগামীরা তাঁকেই আবার সভাপতি হিসেবে চান। কিন্ত গান্ধী & কোম্পানি এর বিরোধিতা করেন। এমনকি কবিগুরু গান্ধীকে চিঠি দিয়ে সুভাষের সাথে এই নোংরা রাজনীতি করতে না বলেন এবং দ্বিতীয়বার সুভাষের সভাপতির পক্ষে রায় দেন, তবুও গান্ধী কর্ণপাত পর্যন্ত করেন না। অবশেষে সুভাষ অনুগামীদের ইচ্ছাকে মর্যাদা দিয়ে ভোটে দাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন। এবার গান্ধী তীব্রতর বিরোধীতা শুরু করেন। সুভাষের বিরুদ্ধে সীতারামাইয়া পট্টভীনায়ককে দাড় করান এবং ঘোষনা করেন সীতারামাইয়ার পরাজয় হবে তার পরাজয়, যদি সুভাষ জয়ী হয় তবে তিনি রাজনীতি ছেড়ে দেবেন। এমনকি সুভাষকে বখাটে ছেলে বলেও তিরস্কার করেছিলেন ঐ ঢোঙ্গী সন্ন্যাসী গান্ধী। "মিঃ গান্ধী, এমন বখাটে ছেলে যদি দেশে আর ২/১ টা থাকতো তবে দেশের চেহারা অনেক আগেই পাল্টে যেতো। আর আপনি ও আপনার চ্যালা-চামুন্ডারা ধুতি গুটিয়ে ভেগে তাল পেতেন না"।
যাই হোক, একদিকে পুরো গান্ধী ব্রিগেড যেমন--গান্ধী, নেহেরু,রাজেন্দ্রপ্রসাদ,সর্দার প্যাটেল, আবুলকালাম আজাদ, ভুলাভাই দেশাই, সীতারামাইয়া, গোবিন্দবল্লভ পন্হ, সরোজিনী নাইডু, রাজা গোপালাচারী ইত্যাদিরা, আর একদিকে একা সুভাষ তাঁর অনুগামীদের নিয়ে। কি হয়েছিল জানেন? সুভাষ একা ধরাশায়ী করেছিল পুরো গান্ধী ব্রিগেডকে। যাকে বলে গোহারা হারানো। সুভাষ পেয়েছিলেন ১৫৭৫ টি ভোট এবং সীতারামাইয়া পেয়েছিলেন ১৩৪৬ টি ভোট। এই ঘটনা গান্ধীর সকল চামচেদের ভয়ানক আতঙ্কিত করেছিল। যাঁর(নেতাজি) সামনে গান্ধীজির এই অবস্থা, তাহলে তাঁর সামনে তাদের(গান্ধীর চ্যালাচামুন্ডা) অবস্থা কেমন হবে?
নেতাজির নেতৃত্ব ও ব্যক্তিত্বের ক্ষমতায় গান্ধী আতঙ্ক ও হিংসায় জ্বলেছিল। গান্ধী ও তার চামচেরা ভেতরে ছিল স্বহিংস আর অহিংসার মুখোশ পড়ে থাকতো, বুকের পাটায় দম না থাকলে চামচাগিরিই করতে হয়। যাই হোক, নিজের প্রতিজ্ঞা অনুযায়ী গান্ধী রাজনীতি তো ছাড়লেনই না উল্টে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচিত সুভাষের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষনা করলেন। এই ঢোঙ্গী লোকটার দ্বিচারিতার অন্ত ছিল না।
এবার শুনুন ক্ষমতালোভী গান্ধী ব্রিগেডের আসল শয়তানিঃ
কংগ্রেস সংবিধান অনুযায়ী সভাপতিই সর্বেসর্বা, তিনিই ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করেন। কিন্তু পরাজয়ের হিংসায় গান্ধী ব্রিগেড সংবিধান তো দূর সাধারন ভদ্রতা জ্ঞানও ভুলে যান। শয়তান গোবিন্দবল্লভ পন্হ নতুন নিয়ম বের করেন যে এখন থেকে সভাপতিকে গান্ধীর মত অনুসারে চলতে হবে, যা ইতিহাসে কুখ্যাত প্রস্তাব হিসেবে প্রচলিত। আর গান্ধী ঘোষনা করেন যে সরকার চালাতে সুভাষকে কোনোরকম সাহায্যই করবে না। সামনেই ত্রিপুরী কংগ্রেসের অধিবেশন। সুভাষ প্রচন্ড অসুস্থ। তাঁর ডাঃ নিলরতন সরকার কয়েকদিন বিছানা থেকে উঠতেই বারন করেছেন, কিছু হয়ে যেতে পারে, ১০৪ জ্বর। অসুস্থ সুভাষ গান্ধীকে কংগ্রেস অধিবেশন কয়েকদিন পেছাতে অনুরোধ করেন। কিন্তু গান্ধী অধিবেশন পেছায় না, উপরন্তু নেহেরু বলেন ওটা নাকি সুভাষের রাজনৈতিক জ্বর। অতঃপর বীর সুভাষ ঐ অসুস্থ অবস্থাতেই স্ট্রেচারে করে ত্রিপুরী কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন। এমনকি শয়তান গান্ধীপন্থীরা নিজেদের ডাক্তার দিয়ে পরীক্ষা করান যে সত্যি সুভাষ অসুস্থ কিনা? তাঁর হয়ে পদত্যাগ পত্র পাঠ করেছিলেন তার দাদা শরতচন্দ্র বোস। সুভাষের পদত্যাগে গান্ধীর চ্যালাচামুণ্ডারা "হিন্দুস্থান কা হিটলার" বলে গান্ধীর জয়ধ্বনি তোলে।
অত্যন্ত নিম্ন মানসিকতা ও ছোটলোক ছাড়া এমন ব্যাবহার আশা করা যায় না। আর এরা স্বাধীনতা সংগ্রামী? এরা এক এক প্রকার নিম্নশ্রেণীর স্বার্থপর ক্ষমতালোভী ছিলেন।
সুভাষ পদত্যাগ করার কিছুদিন পর তাঁর অনুগামীরা ও সাধারন মানুষ গান্ধীর চ্যালাদের একবার ঘিরে ধরে অপমানিতও করতে নিয়েছিল। কিন্তু মহান সুভাষ তাদের নিজে সিকিউরিটি দিয়ে ওখান থেকে স্বসন্মানে বেরিয়ে যেতে সাহায্য করেছিলেন।
কংগ্রেসের সংবিধান অনুযায়ী সুভাষ চাইলে নিজের অনুগামীদের নিয়েই কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটি একাই গঠন করতে পারতেন। কিন্ত তিনি দেখলেন তাতে কংগ্রেস বিভক্ত হবে এবং স্বাধীনতা সংগ্রাম ব্যাহত হবে। তাই মহান মানুষটা পদত্যাগ করেছিলেন। এই বিষয়ে ব্রিটিশের তখনকার একটা মন্তব্য খুব গভীর অর্থ রাখে..."গান্ধী তার অসহযোগ নীতি ব্রিটিশের বিরুদ্ধে না প্রয়োগ করে করলেন সুভাষের বিরুদ্ধে "।
দ্বিচারি গান্ধী ও তার শয়তান চেলাগুলোর জন্যই ভারতমাতার বীর সন্তানকে যুদ্ধ করতে দেশ ছাড়তে হলো। নইলে মহানায়ক দেশে থেকেই অনেক আগেই দেশটাকে স্বাধীন করতেন।তাঁকে আমরা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পেতাম, দেশভাগও হতো না, এশিয়া এক থাকতো এবং আমরা অনেক আগেই এক সমৃদ্ধ ভারতবর্ষকে দেখতে পেতাম।
শেয়ার করে সবাইকে সত্য ইতিহাস জানিয়ে দিন।
সবাই তৈরী থাকবেন। আগামীতে এক বিরাট আন্দোলন শুরু হতে চলেছে। সূচনা অনেক আগেই হয়েছে। নেতাজি রহস্য ও স্বাধীনতার সত্য ইতিহাস প্রকাশ করাই আমাদের লক্ষ্য। দেশের সব জনগণকেই এই আন্দোলনে সামিল হবার আহ্বান জানাচ্ছি। সঠিক সময়ে সকলকে সবকিছু জানানো হবে।
জয়হিন্দ।
(তথ্যসূত্রঃ আমি সুভাষ বলছি, সুভাষ ঘরে ফেরে নাই, সুভাষচন্দ্র, ইতিহাসবিদ আর সি মজুমদার, নীরদ চৌধুরী, বিশ্ব ইতিহাসবিদদের বিভিন্ন ডকুমেন্টরি... ইত্যাদি ইত্যাদি)!
(তথ্যসূত্রঃ আমি সুভাষ বলছি, সুভাষ ঘরে ফেরে নাই, সুভাষচন্দ্র, ইতিহাসবিদ আর সি মজুমদার, নীরদ চৌধুরী, বিশ্ব ইতিহাসবিদদের বিভিন্ন ডকুমেন্টরি... ইত্যাদি ইত্যাদি)!
(#হেবীরলহপ্রনাম।। #কংগ্রেসসভাপতি ১৯৩৮ এবং ১৯৩৯ সালে #দ্বিতীয়বার #বিজয়ী #অসুস্থ #কংগ্রেস #সভাপতি স্ট্রেচারে করে অধিবেশনে যোগ দিচ্ছেন)
No comments:
Post a Comment
পোস্টটি ভালো লাগলে কমেন্ট করুন। আপনার কোন তথ্য সংরক্ষণ বা প্রকাশ করা হবে না। আপনি Anonymous বা পরিচয় গোপন করেও কমেন্ট করতে পারেন।