পবিত্র বেদে বিজ্ঞান - UHC বাংলা

UHC বাংলা

...মুক্ত চিন্তায় বিশ্বাসী একটি গ্লোবাল বাংলা প্লাটফর্ম!

ব্রেকিং নিউজ

Home Top Ad

Monday, January 6, 2020

পবিত্র বেদে বিজ্ঞান

সৃষ্টিতত্ত্ব, চাঁদ, পৃথিবীর গতি, সূর্যের আকর্ষণ, বর্ষচক্র নিয়ে রেফারেন্স সহ নিচে লিখেছি—


   পবিত্র বেদে বিজ্ঞান

সৃষ্টিতত্ত্ব

সৃষ্টিতত্ত্ব নিয়ে বেদ এর বিখ্যাত নাসাদিয় সূক্ত এবং হিরন্যগর্ভ সূক্ত এর কথা অনেকেই জানেন। ধর্মবিশেষজ্ঞ ও বিজ্ঞানী মহলে বহুল আলোচিত এই দুটি সুক্তের আলোকে সৃষ্টিতত্ত্ব সংক্ষেপে আলোচনা করা হল-

সেকালে যা নেই তাও ছিল না, যা আছে তাও ছিল না। পৃথিবী ছিল না, অতি দূরবিস্তৃত আকাশও ছিল না। আবরণ করে এমন কি ছিল? কোথায় কার স্থান ছিল? দুর্গম ও গম্ভীর জল কি তখন ছিল?
(ঋগ্বেদ, ১০/১২৯/১)

সর্বপ্রথম অন্ধকার দ্বারা আবৃত ছিল। সমস্তই চিহ্নবর্জিত ও চতুর্দিক জলময় ছিল অবিদ্যমান বস্তু দ্বারা সে সর্বব্যাপী আচ্ছন্ন ছিলেন। তপস্যার প্রভাবে এক বস্তুর জন্ম নিলেন।  সেখান থেকে প্রচণ্ড তাপের সৃষ্টি হল।
(ঋগ্বেদ, ১০/১২৯/৩)




প্রথমেই হিরন্যগর্ভই সৃষ্টি হলো অর্থাৎ সর্বপ্রথম জলময় প্রাণের উৎপত্তি হয়। এখানে প্রথম প্রাণকে প্রজাপতি( ব্রহ্মা) বলা হয়েছে।
             (ঋগ্বেদ, ১০/১২১/১)

সেই হিরন্যগের্ভ ছিল উত্তপ্ত তরল যাতে ছিল সৃষ্টির সমস্ত বীজ।
          (ঋগ্বেদ, ১০/১২১/৭)

প্রথমে হিরন্যগর্ভ সৃষ্টিহল।সেখানে
ছিল উত্তপ্ত গলিত তরল।এটি ছিল মহাশুন্যে ভাসমান।বছরের পরবছর এই অবস্থায় অতিক্রান্ত হয়।
                  (শতপথ ব্রাহ্মণ, ১১/১/৬/১)

তারপর যেখানে বিস্ফোরন ঘটল গলিত পদার্থ থেকে,বিন্দু থেকে যেন সব প্রসারিত হতে শুরু হল।
                  (ঋগ্বেদ, ১০/৭২/২)

সেই বিস্ফোরিত অংশসমূহ থেকে বিভিন্ন গ্রহ,নক্ষত্র তৈরী হল।
                 (ঋগ্বেদ, ১০/৭২/৩)

তার এক জীবনপ্রদ অংশ থেকে পৃথিবী সৃষ্টি হল।
                  (ঋগ্বেদ, ১০/৭২/৪)

তারপর সৃষ্ট ক্ষেত্রে সাতধাপে সংকোচন-প্রসারণ সম্পন্ন হল।তারপর সৃষ্টি হল ভারসাম্যের।
                   (ঋগ্বেদ, ১০/৭২/৮-৯)

সূর্যের সৃষ্টি কীভাবে হলো? বলা হয় আকাশ গঙ্গা বা ছায়াপথ থেকে। আবার বলা হয় আকাশ গঙ্গা সৃষ্টি হয়েছে Big Bang বা 'আদি বিস্ফোরণ' এর মাধ্যমে। কিন্তু এই Big Bang এর পূর্বে কি ছিল তা কিন্তু বিজ্ঞান  বলতে পারে না। বেদের ঋষি এখানে বিষয়টি ব্রহ্মের উপর ছেড়ে দিয়েছেন।


       প্রকৃতির চাঁদ

হে মানব! ইন্দ্রই (সর্ব ঐর্শ্বর্য্যের অধিকারি পরমাত্মা) গ্রহ-নক্ষত্র ও উপগ্রহসমূহ যেমন,পৃথিবী ও চাঁদকে চলমান রেখেছেন।
                       (ঋগ্বেদ ২/১২/৩)

সেই ইন্দ্রই এই গতিশীল সৃষ্টির সকল চলমান বস্তুর স্রষ্টা।
                       (ঋগ্বেদ ২/১২/৪)

এই গতিশীল সৃষ্টির সকল চলমান বস্তুতে ঈশ্বর পরিব্যাপ্ত হয়ে আছেন।
                     (যজুর্বেদ, ৪০/২)

অর্থ্যাৎ পবিত্র বেদ বলেই দিয়েছে যে পৃথিবী, সুর্য, অন্যান্য গ্রহ-নক্ষত্র থেকে শুরু করে সমগ্য সৃষ্টি গতিশীল।
প্রকৃতিতে পৃথিবীর গতি

অহস্তা যদপদী বর্ধত ক্ষা শচীভির্বেদ্যানাম্।
শুষ্ণং পরিপ্রদাক্ষিনিদ্ বিশ্বায়বে নিশিশ্নথঃ।
(ঋগ্বেদ, ১০/২২/২৪)

পৃথিবী যদিও হস্তপদহীন তথাপি ইহা চলিতেছে, অবশ্য জ্ঞাতব্য পরমাণু শক্তি দ্বারা সূর্য্যের চারিদিকে প্রদক্ষিন করিতেছে। হে পরমাত্মন্! সমগ্র মানব সমাজের মধ্যে আস্তিক্যবোধ জাগাবার জন্য তুমি এরুপ রচনা করেছ তিনি (ইন্দ্র)।

অর্থ্যাৎ, পৃথিবীর নেই হস্ত বা পদ, তবুও তা গতিশীল। এর উপর অবস্থিথিত বস্তুসমূহ ও এটার সাথে গতিশীল। এটি সূর্যের চারদিকে ঘূর্নায়মান সমগ্য মানুষের মধ্যে আস্তিক্য বোধ জাগিয়ে তুলতে তিনি (ইন্দ্র)।



               
পৃথিবী তার মাতা জলকে নিয়ে অন্তরিক্ষে চলমান রয়েছে, এবং তার পিতা সুর্যের চারদিকে ঘূরছে।
                     (ঋগ্বেদ ১০/১৮৯/১)

 পৃথিবী সুর্যের চারদিকে ঘূর্নায়মান।
                     (যজুর্বেদ, ৩/৬)

পৃথিবী সুর্যের চারদিকে ঘুরে তার সম্পর্কে বিজ্ঞান বলে যে এর কারণ হচ্ছে অভিকর্ষ (Gravity) বল—


পৃথিবীতে সূর্যের আকর্ষণ


সবিতা যত্রৈঃ পৃথিবী মরুভ্ণাদস্কম্ভনে
সবিতা দ্যামৃদৃংহৎ অশ্মমিবাধুক্ষদ্ধু নিমন্তরক্ষমাতূর্তে বদ্ধং সবিতা সমুদ্রম।
(ঋগ্বেদ, ১০/১৪৯/১)

সূর্য রর্জ্জুবৎ আর্কষণ দ্বারা পৃথিবীকে বাধিয়া রেখেছে। নিরাধার আকাশেও ইহা অন্যান্য গ্রহকে সুদৃঢ় রাখিয়াছে।
অচ্ছেদ্য আর্কষণ রর্জ্জুতে আবদ্ধ, গর্জনশীল, গ্রহসমূহ নিরাধার আকাশে অর্শ্বের ন্যায় পরিভ্রমন করিতেছে।(ঋগ্বেদ ১০।১৪৯।১)

অর্থ্যাৎ, সবিতা (ঈশ্বরের একটি গুনবাচক নাম) পৃথিবী ও অন্যান্য গ্রহসমূহ কে আকর্ষণশক্তির মাধ্যমে তাদের কক্ষপথে বেঁধে রেখেছে, নিরাধার আকাশলোকে ইহারা অশ্বের ন্যায় পরিভ্রমন করে।

পবিত্র বেদের বিভিন্ন মন্ত্রে সুর্য কেও একইভাবে গতিশীল বলা আছে।
                 যেমন— (যজুর্বেদ, ৩৩/৪৩)।

সূর্য ঘুরছে তার নিজ কক্ষপথে সাথে নিয়ে গ্রহসমূহকে আকর্ষনশক্তির বলে"।
                       (সামবেদ, ৮/২/১০)

"হে ইন্দ্র! তুমিই গতিশীল সুর্য -চন্দ্রের  প্রতিষ্ঠাতা।"


No comments:

Post a Comment

পোস্টটি ভালো লাগলে কমেন্ট করুন। আপনার কোন তথ্য সংরক্ষণ বা প্রকাশ করা হবে না। আপনি Anonymous বা পরিচয় গোপন করেও কমেন্ট করতে পারেন।

অন্যান্য

Post Bottom Ad

আকর্ষণীয় পোস্ট

code-box