বর্ণবাদের দায়ে দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ হলে পাকিস্থান কেন হবে না? - UHC বাংলা

Untitled+2

...মুক্ত চিন্তায় বিশ্বাসী একটি গ্লোবাল বাংলা প্লাটফর্ম!

Home Top Ad

Sunday, December 29, 2019

demo-image

বর্ণবাদের দায়ে দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ হলে পাকিস্থান কেন হবে না?

পাকিস্তান যে একটি ধর্মান্ধ রাষ্ট্র তা কোনও গোপন বিষয় নয়। এই হিসাবে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ধর্মীয় বৈষম্য বা নিপীড়নের যে কোন ঘটনা বিশ্বব্যাপী মানুষকে শুধু হতবাক করে না, পাকিস্তানের অমুসলিম সংখ্যালঘুদের সাথে ঘৃণ্য আচরণ যে দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদ বর্ণের যুগে দেখা গিয়েছিলো তাকেও হার মানায়।
south-africa
 বর্ণবাদের দায়ে দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট থেকে ২১ বছর নিষিদ্ধ ছিল
পাকিস্তানের প্রাক্তন ফাস্ট বোলার শোয়েব আখতার (161.3 কিমি / ঘন্টা দ্রুততম ডেলিভারীর রেকর্ডধারী) পাকিস্তান ক্রিকেট দলের সংখ্যালঘু খেলোয়াড়দের মুখোমুখি ইতোমধ্যে পরিচিত বৈষম্যের বিষয়টি স্বীকার করেছেন। ‘গেম অন হাই’ নামে একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে শোয়েবকে আগের অধিনায়ক রশিদ লতিফ এবং পূর্বের মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান অসীম কামালের সাথে কথোপকথন করতে দেখা গেছে। ক্রিকেট বিশেষজ্ঞ ডঃ নুমান রিয়াজ অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন। বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে  শোয়েব আক্তার হিন্দুদের বিরুদ্ধে পাকিস্তানি খেলোয়াড়দের সহজাত পক্ষপাত সম্পর্কে কথা বলেছেন।
Kaneria-1140x570

দানিশ কানেরিয়া যিনি পাকিস্তান দলের দ্বিতীয় হিন্দু ক্রিকেটার সতীর্থদের দ্বারা তিনি বহু বৈষম্যেরস্বীকার হয়েছিলেন। তিনি পাকিস্তান দলের অনেক ভালো একজন রেকর্ডধারী ক্রিকেটার। তিনি পাকিস্তানের হয়ে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি স্পিনার।স্পট ফিক্সিংয়ের অভিযোগে ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড তাকে  আজীবন নিষিদ্ধ করেছিল।যদিও কথিত আছে তিনি যড়যন্ত্রের স্বীকার। 
23331359_1635161083213930_502196609347417195_o
স্ত্রীর সাথে দানিশ কানেরিয়া
শোয়েব আখতার ফাস করেছেন  দানিশ কানেরিয়া কীভাবে বৈষম্যের স্বীকার হয়েছিলেন। তিনি বলেন, তার সতীর্থরাও তার সাথে এক টেবিলে খেতে   অস্বস্তি বোধ করেছিলেন। শোয়েব বলেছিলেন, “দু'জন খেলোয়াড়ের সাথে আমার এ নিয়ে মারামারি হয়েছিল। আমি বলেছিলাম কেউ হিন্দু হলেও খেলবে। সেই একই হিন্দু আমাদের টেস্ট সিরিজ জিতেছে… কিছু সতীর্থরা কেন (দানিশ) আমাদের সাথে খাবে তার কারণ জিজ্ঞাসা করেছিল। আমি তাদের সকলকে বলেছিলাম যে আমি আপনাকে এখনই বের করে দিবো। আপনি একজন ক্যাপ্টেন হতে পারেন। কিন্তু সেটা আপনার নিজের ভিতরে রাখেন।ইংল্যান্ডে সে ৬-৬টি উইকেট পেয়েছে। ইংল্যান্ডে দানিশ এবং শামি আমাদেরকে জিতেছিল। "দানিশ কানারিয়া  276 টি আন্তর্জাতিক উইকেট এবং ১০০০ এরও বেশি প্রথম-শ্রেণীর উইকেট নিয়েছিলেন। খেলা ৬১ টি টেস্ট ম্যাচে ক্যানেরিয়া ২৬১ উইকেট নিয়েছিল। পাকিস্তান একটি উদীয়মান ক্রিকেট তারকার জীবনকে নষ্ট করে দিয়েছিল, কেবল মাত্র তার ধর্মের কারণে তাকে নির্মমভাবে অপমানকরা হয়েছে।
শোয়েব আখতার ইউসুফ ইয়োহানাকে (বর্তমানে মোহাম্মদ ইউসুফ) সম্পর্কেও কথা বলেছেন।ইউসুফ ইহোনা  মূলত একজন খ্রিস্টান, তিনিও সতীর্থ এবং প্রতিষ্ঠানের দ্বারা এবং বড় বড় লোকের দ্বারা অভূতপূর্ব বৈষম্যের মুখোমুখি হওয়ার পরে তাকে ইসলাম গ্রহণ করতে বাধ্য করা হয়েছিল। তাঁর পিতা-মাতা তার ধর্মান্তরিত হওয়ার সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ করেছিলেন, তবে জন্য অন্য কোনও বিকল্প পথ খোলা ছিল না।রশিদ লতিফ বলেছিলেন, “ইউসুফ যোহানাকে অনেক অপমান করা হয়েছিল। তিনি একজন গড-গিফটেড খেলোয়াড় ছিলেন। ”শোয়েব আরও বলেছিলেন,“ ইউসুফের ১২,০০০ রান করা উচিত ছিল। কিন্তু আমরা কখনই তাকে রক্ষা করি নি। ”
18250
 ইউসুফ ইয়োহানাকে ইসলাম গ্রহণ করতে বাধ্য করা হয়েছিল
যারা ভারতের সংখ্যালঘুদের প্রতি আচরণেরবিষয়ে  প্রশ্ন করে তাদের সকলকে  দানিশ কানেরিয়ার বিষয়টি মনে করিয়ে দেওয়া উচিত। এটা অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে যে পাকিস্তানের চেয়ে অনেক বেশি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের খেলোয়াড় রয়েছে ভারতের। এমনকি পাকিস্তানের সাথে ভারতকে তুলনা করা লজ্জাজনক ! সৈয়দ কিরমানি থেকে মোহাম্মদ শামি, আজহারউদ্দিন, মুনসুর আলী খান (যারা  অধিনায়কও হয়েছিলেন) থেকে ইউসুফ এবং ইরফান পাঠান, জহির খান থেকে মোহাম্মদ কাইফ পর্যন্ত ভারত তাদের ধর্মের ভিত্তিতে খেলোয়াড়দের বিরুদ্ধে কখনও বৈষম্য করেনি। হরভজন সিং, নবজাত সিং সিধু, যুবরাজ সিং, বিজন সিং বেদী প্রমুখ, ভারতীয় দলের শিখ ক্রিকেটার ছিলেন।এই খেলোয়াড়দের সাথে কখনোই অস্পৃশ্যদের মতো আচরণ কেউ করেনি। যেখানে পাকিস্তানের অমুসলিম খেলোয়াড়দের ‘কাফির’ বলে গালি দেয়া হয়।
পাকিস্তানের তুলনায় বাংলাদেশ ক্রিকেট দল অনেক ভাল অবস্থানে আছে। ইসলামী জাতি হওয়া সত্ত্বেও বর্তমানে দলে সৌম্য সরকার এবং লিটন দাস দলে রয়েছেন দুই বাঙালি হিন্দু। অতীতেও অলোক কাপালি এবং তপশ বৈশ্যের মতো খেলোয়াড় ছিল যারা মুসলমান ছিল না, তবুও তাদের ধর্মের  জন্য কখনও বৈষম্যের মুখোমুখি হতে হয়নি।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (ICC) শোয়েব আখতার এবং রশিদ লতিফের উদ্ঘাটনগুলির প্রতি নজর রাখা উচিত এবং ধর্মান্ধ পাকিস্তানি ক্রিকেট দলের সাথে কোনও ক্রিকেট খেলা বন্ধ করে দেয়া উচিত।যেমনটি করা হয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকার সাথে। পাকিস্তানের ঘটনা দক্ষিণ আফ্রিকার চেয়ে কোন অংশে কোন নয়। তাহলে দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ হলে পাকিস্থান কেন হবে না ?

অন্যান্য

Post Bottom Ad

আকর্ষণীয় পোস্ট

code-box

Contact Form

Name

Email *

Message *