৪৮ বছরেও মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পায়নি রমা বালা পাল ! - UHC বাংলা

Untitled+2

...মুক্ত চিন্তায় বিশ্বাসী একটি গ্লোবাল বাংলা প্লাটফর্ম!

Home Top Ad

Thursday, December 5, 2019

demo-image

৪৮ বছরেও মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পায়নি রমা বালা পাল !



Banskhali-CTG-Pic-Anupam-04.12.2019
চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার সাধনপুর ইউনিয়নের বাণীগ্রামে স্বাধীনতা যুদ্ধে পাক হানাদার বাহিনীর হাতে সম্ভ্রম হারিয়ে আগুনে ঝাপ দিয়ে আত্মহুতি দেয়া নববধু রমা রানী পাল স্বাধীনতার ৪৮ বছরে পরেও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পায়নি। পরিবারের সদস্যরা নিহতের স্বামীসহ মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে অনেক ধর্ণা দিয়েও তাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দিয়ে সরকারি তালিকাভুক্ত করতে পারেনি।
জানা যায়, সাধনপুর ইউনিয়নের বাণীগ্রামের ৫নং ওয়ার্ডের সুরেশ চন্দ্র পালের পুত্র সাধন চন্দ্র পালের সাথে কক্সবাজার জেলার খুরুস্কুলের মদন কান্তি পালের কন্যা রমা রানী পালের সাথে ১৯৭১ সালের ৪ মার্চ আনুষ্ঠানিক ভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর শ্বশুর বাড়ী বাঁশখালী উপজেলার বাণীগ্রাম পাল পাড়ায় অবস্থানকালে স্থানীয় রাজাকার আলবদর, আলসামস্ বাহিনীর সহযোগিতায় পাকিস্থানী সৈন্যরা ১৯৭১ সালের ১৯ মে সাধন চন্দ্র পালের বসতঘরে ঢুকে পরিবারের অন্যান্যদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নববধু রমা রানী পালকে নির্বিচারে ধর্ষন ও নির্যাতন চালায়। নির্যাতিত রমা রানী পাল পাকিস্থানী হানাদার বাহিনীর কাছ থেকে পালিয়ে নিকটবর্তী হংস পাড়ায় বসতবাড়িতে পাক হানাদার বাহিনীর দেয়া আগুনে ঝাপিয়ে পড়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। ওই দিন পাক বাহিনীর সদস্যরা পাল পাড়া, হংস পাড়া, আচার্য্য পাড়াসহ পার্শ্ববর্তী বেশ কয়েকটি পাড়ার শত শত বসতঘরে অগ্নিসংয়োগ ও লুটপাট চালায়। অগ্নিদ্বগ্ধ রমা রানী পালের স্বামী সাধন চন্দ্র পাল, দেবর সুনীল কান্তি পাল, প্রতিবেশী নিরঞ্জন পাল, অরুণ পাল, বিশ্বনাথ পাল, বিভূতি পাল, পুলিন পালসহ ১০/১২ যুবক আগুনে ঝলসে যাওয়া রমাকে আগুন থেকে উদ্ধার করে। ওই সময় এলাকায় ডাক্তার না থাকায় স্থানীয় পাহাড় লতা পাতা সংগ্রহ করে কবিরাজি ঔষুধ বানিয়ে রমাকে চিকিৎসা করে। কিন্তু ঘটনার রাতেই রমা বালা পাল মৃত্যুকোলে ঢলে পড়ে।
রমা বালা পালের সৎ পুত্র পল্লী চিকিৎসক সঞ্জয় পাল বলেন, ‘আমার বাবা সাধন চন্দ্র পাল বেঁচে থাকতে বিভিন্ন স্থানে কাকা সুনীল পালকে নিয়ে অনেক জায়গায় পাকিস্থানী সৈন্যদের নির্যাতনের শিকার হয়ে আত্মহননের বিষয়টি অবহিত করলেও কোন ফল আসেনি। রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেয়া হয়নি আমার বড় মাকে।’
রমা বালা পালের দেবর সুনীল কান্তি পাল বলেন, ‘বৌদির আত্মহুতি দেয়ার ঘটনা নিয়ে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বিভিন্ন জায়গায় ধর্ণা দিয়েও কোন কাজ হয়নি। পাকিস্থানী হানাদারদের নির্যাতনের কথাটি নিরবেই সহ্য করতে হচ্ছে পরিবারের সদস্যদের।’ বাঁশখালী মুক্তিযোদ্ধার ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার আবুল হাশেম বলেন, ‘আমি মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হিসেবে বাঁশখালীতে দায়িত্বপালনের পর রমা রানী পালের মৃত্যুর বিষয়টি কেউ অবহিত করেনি। পূর্বে কি হয়েছে, কার সাথে যোগাযোগ করেছে আমি জানি না।’ বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোমেনা আক্তার বলেন, ‘বাঁশখালীর সাধনপুর ইউনিয়নের বাণীগ্রাম পাল পাড়ায় পাক হানাদার বাহিনীর হাতে নির্যাতনের শিকার রমা রানী পালের বিষয়ে ইতিপূর্বে কেউ অবহিত করেনি। খোঁজ খবর নিয়ে বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।’
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের ১৯ মে বাঁশখালীতে পাকবাহিনীরা প্রথম হানা দেয়। ঐদিন ১০ ট্রাক সাজোয়া বহর নিয়ে বাণীগ্রাম থেকে শুরু করে নাপোড়া পর্যন্ত জগন্যতম বর্বর নির্যাতন, বাড়ীঘরে অগ্নিসংযোগ ও নিরীহ লোকজনদের গুলি করে নৃশংস ভাবে হত্যা করে। ওই দিন বাণীগ্রামেই ৬২ জন নিরীহ লোককে তারা নির্মম ভাবে হত্যা পাক বাহিনীরা।

অন্যান্য

Post Bottom Ad

আকর্ষণীয় পোস্ট

code-box

Contact Form

Name

Email *

Message *