জাতপাত নিয়ে সনাতন ধর্ম কি বলে ? - UHC বাংলা

UHC বাংলা

...মুক্ত চিন্তায় বিশ্বাসী একটি গ্লোবাল বাংলা প্লাটফর্ম!

ব্রেকিং নিউজ

Home Top Ad

Thursday, September 19, 2019

জাতপাত নিয়ে সনাতন ধর্ম কি বলে ?


 শুরু করি শ্রীলংকান হিন্দুদের দিয়ে। শ্রীলঙ্কা থেকে প্রাণে বাঁচতে ভারতে আসে শ্রীলঙ্কান হিন্দুরা।সাথে আসে কিছু চুতিয়া উচ্চবর্ণের লোক!
ওরা ভারতে এসে তামিলনাড়ুরর দলিত বা কথিত নীচু বর্ণের হিন্দুদের মন্দিরে প্রবেশে বাধা দেয়।ওদের সাথে যোগ দেয় স্থানীয় উচ্চবর্ণের হিন্দুরাও।যাদের ধর্মজ্ঞান স্বল্প! মন্দিরে প্রবেশে বাধা পেয়ে উপায়ান্তর না দেখে ধর্মান্তরিত হওয়ার হুমকি দেয় নিম্নবর্ণের হিন্দুরা!


আর এতেই সুযোগ পেয়ে মাঠে নামে যীশুর সেলসম্যানরা ও মুসলিম জিহাদীরা!! টাকার লোভ দেখাতে নামে একদল,আরেকদল নিজেদের ধর্মীয় বই দিতে থাকে ওই দলিত হিন্দুদের মাঝে !
কিন্তু দলিত হিন্দুরা চিন্তা ভাবনা করে বলে ওরা কেবলমাত্র মন্দিরে ঢুকতে পারেনি বলেই ধর্মান্তরিত হতে চেয়েছিলো।সনাতন ধর্মের সকল রীতিনীতিতে ওদের শ্রদ্ধা ও বিশ্বাস আছে।মন্দিরে ঢুকতে পারলে ওরা ধর্মান্তরিত হবে না।ওরা ধর্মান্তর হওয়ার চিন্তা বাদ দিয়েছে।কারন স্থানীয় হিন্দু সংগঠনগুলো এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিয়েছে। সূত্রঃ আলজাজিরা,টাইমস অফ ইন্ডিয়া http://m.timesofindia.com/city/trichy/Dalits-give-up-decision-to-embrace-Islam/articleshow/53445672.cms

এখন প্রশ্ন হলো কেনইবা এরকম ঘটনা ঘটবে? কেন হিন্দুদের দলিত আখ্যা দিয়ে মন্দিরে ঢুকতে দেয়া হবে না! কেনইবা কেবলমাত্র নীচুজাতে ঘরে জন্মেছে বলে ওদের দলিত বলা হবে ??  আসুন এব্যাপারে সনাতন হিন্দু শাস্ত্র কি বলে দেখি, জাতপাত নিয়ে ভগবান শ্রী কৃষ্ণ শ্রীমৎভগবতগীতায় বলেছেন, চতুর্বনংময়া সৃষ্টং গুণ কর্ম বিভাগশ’ অর্থাত্ গুণ ও কর্মের বিভাগ অনুসারে চারটি বর্ণ সৃষ্টি করা হয়েছে।যারা ভালো কাজ করবে ও জ্ঞানী তারা উঁচু জাত ও যারা খারাপ কাজ করবে তারা নীচু জাত।সুতরাং জাতপাত জন্ম নয়, কর্ম অনুসারে। আসুন এবার দেখি সনাতন সমাজে বহুল প্রচলিত ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য, শূদ্র সম্পর্কে আমাদের পবিত্র ‘বেদ’ এ কি আছে—
ঋগবেদ ১.১১৩.৬ "একজন জ্ঞানের উচ্চ পথে(ব্রাক্ষ্মন) ,অপরজন বীরত্বের গৌরবে(ক্ষত্রিয়) , একজন তার নির্দিষ্ট লক্ষ্যে(পেশাভিত্তিক), আরেকজন সেবার পরিশ্রমে(শূদ্র)। সকলেই তার ইচ্ছামাফিক পেশায়,সকলের জন্যই ঈশ্বর জাগ্রত।

 ঋগবেদ ৯.১১২.১ একেকজনের কর্মক্ষমতা ও আধ্যাত্মিকতা একেক রকম আর সে অনুসারে কেউ ব্রাক্ষ্মন কেউ ক্ষত্রিয় কেউ বেশ্য কেউ শূদ্র। 
  ব্রাক্ষ্মন কে? 
ঋগবেদ ৭.১০৩.৮ যে ঈশ্বরের প্রতি গভীরভাবে অনুরক্ত, অহিংস,সত্‍,নিষ্ঠাবান, সুশৃঙ্খল,বেদ প্রচারকারী, বেদ জ্ঞানী সে ব্রাক্ষ্মন।
 ক্ষত্রিয় কে ?
ঋগবেদ ১০.৬৬.৮ দৃড়ভাবে আচার পালনকারী, সত্ক৮র্মের দ্বারা শূদ্ধ, রাজনৈতিক জ্ঞান সম্পন্ন,অহিংস,ঈশ্বর সাধক,সত্যের ধারক ন্যায়পরায়ন,বিদ্বেষমুক্ত ধর্মযোদ্ধা,অসত্‍ এর বিনাশকারী সে ক্ষত্রিয়। 
 বৈশ্য কে ?
 অথর্ববেদ ৩.১৫.১ দক্ষ ব্যবসায়ী দানশীল চাকুরীরত এবং চাকুরী প্রদানকারী।
 শূদ্র কে ?
ঋগবেদ ১০.৯৪.১১ যে অদম্য,পরিশ্রমী, ¬ অক্লান্ত জরা যাকে সহজে গ্রাস করতে পারেনা,লোভমুক্ত ¬ কষ্টসহিষ্ণু সেই শূদ্র।
এছাড়াও, রাবণ জন্মেছিলেন ঋষি পুলৎস্যের ঘরে কিন্তু পরে রাক্ষস হন। প্রবৃদ্ধ ছিলেন রাজা রঘুর পুত্র কিন্তু পরে রাক্ষস হন। ত্রিশঙ্কু ছিলেন একজন রাজা যিনি পরে চন্ডাল হন। বিশ্বামিত্রের পুত্রেরা শূদ্র হন। বিশ্বামিত্র নিজে ছিলেন ক্ষত্রিয় যিনি পরে ব্রাহ্মণ হন। বিদুর ছিলেন এক চাকরের পুত্র কিন্তু পরে ব্রাহ্মণ হন এবং হস্তিনাপুর রাজ্যের মন্ত্রী হন। ঋষি বিশ্বামিত্র অব্রাক্ষণ হিসেবে জন্ম নিলেও পরে কর্ম ও জ্ঞান দিয়ে ব্রাক্ষণ হন,এছাড়া শ্রী রাম কথিত শর্বরীকে নবধারা ভক্তি জ্ঞান দিয়েছেন,ভক্ত রবিদাসকে অপমান করায় স্বর্গের ঘন্টাপর্যন্ত বন্ধ হয়ে যায়,ভগবান ভক্তের জাতপাত দেখেন না,দেখেন কর্ম ও ভক্তি। অনেকে হয়তো বলবেন নীচুজাতদের নিয়ে অনেক কিছু বলা আছে। কিন্তু দাদা,গীতায় বলা আছে জন্ম নয় কর্ম অনুযায়ী জাতপাত।মানে ভালো কর্ম উঁচু জাত ও খারপ কাজ করলে নীচু জাত। খারপ কাজ করলে শাস্তির কথা তো সবখানেই আছে,এমনকি দেশের সংবিধানেও। তাই আসুন জন্ম অনুসারে নয়,কর্ম অনুসারে জাতপাত হয় এটাকে মানি। যে খারাপ কাজ করবে সেই নীচু জাত।প্রচলিত জাতপাত প্রথাকে বিলুপ্ত করি। শেয়ার করে সবাইকে জানিয়ে দিন,এই ধর্মযুদ্ধে আমাদের সাথি হোন।

No comments:

Post a Comment

পোস্টটি ভালো লাগলে কমেন্ট করুন। আপনার কোন তথ্য সংরক্ষণ বা প্রকাশ করা হবে না। আপনি Anonymous বা পরিচয় গোপন করেও কমেন্ট করতে পারেন।

অন্যান্য

Post Bottom Ad

আকর্ষণীয় পোস্ট

code-box