কালাম তাঁর কর্মজীবন শুরু করেছিলেন একজন বিজ্ঞানী হিসেবে। পরে তিনি
ভারতের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন।
কালামের জন্ম বর্তমান ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের রামেশ্বরমে।
তিনি পদার্থবিদ্যা বিষয়ে সেন্ট জোসেফ'স কলেজ থেকে এবং বিমান
প্রযুক্তিবিদ্যা (এরোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং) বিষয় নিয়ে মাদ্রাজ
ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি (এম আই টি) থেকে পড়াশোনা করেছিলেন। এরপর চল্লিশ
বছর তিনি প্রধানত রক্ষা অনুসন্ধান ও বিকাশ সংগঠন (ডিআরডিও) ও ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থায় (ইসরো) বিজ্ঞানী ও বিজ্ঞান প্রশাসক হিসেবে কাজ করেন। ভারতের অসামরিক মহাকাশ কর্মসূচি ও সামরিক সুসংহত নিয়ন্ত্রিত ক্ষেপণাস্ত্র উন্নয়ন কর্মসূচির সঙ্গে তিনি অঙ্গাঙ্গীভাবে যুক্ত ছিলেন। ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও মহাকাশযানবাহী রকেট উন্নয়নের কাজে তাঁর অবদানের জন্য তাঁকে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র মানব বা মিসাইল ম্যান অফ ইন্ডিয়া বলা হয়। ১৯৯৮ সালে পোখরান-২ পরমাণু বোমা পরীক্ষায় তিনি প্রধান সাংগঠনিক, প্রযুক্তিগত ও রাজনৈতিক ভূমিকা পালন করেন। এটি ছিল ১৯৭৪ সালে স্মাইলিং বুদ্ধ নামে পরিচিত প্রথম পরমাণু বোমা পরীক্ষার পর দ্বিতীয় পরমাণু বোমা পরীক্ষা। এপিজে আব্দুল কালাম ছিলেন নিরামিষভোজী।
২০০২ সালে কালাম তৎকালীন শাসকদল ভারতীয় জনতা পার্টি ও বিরোধী দল ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের
সমর্থনে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। পাঁচ বছর এই পদে আসীন থাকার পর তিনি
শিক্ষাবিদ, লেখক ও জনসেবকের সাধারণ জীবন বেছে নেন। ভারতের সর্বোচ্চ অসামরিক
সম্মান ভারতরত্নসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সম্মান ও পুরস্কার পেয়েছিলেন কালাম।
২০১৫ খ্রিস্টাব্দের ২৭শে জুলাই , সোমবার, মেঘালয়ের শিলং শহরে অবস্থিত ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট নামক প্রতিষ্ঠানে বসবাসযোগ্য পৃথিবী বিষয়ে বক্তব্য রাখার সময় ভারতীয় প্রমাণ সময় সন্ধ্যা ৬:৩০ নাগাদ হৃদ্রোগে আক্রান্ত হন। তাঁকে বেথানী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে সন্ধ্যা ভারতীয় প্রমাণ সময় ৭:৪৫ নাগাদ তাঁর মৃত্যু ঘটে।
২. পরম উৎকর্ষতা হলো একটি চলমান প্রক্রিয়া। এটা হঠাৎ করেই আসে না। ধীরে ধীরে আসে।
৩. যারা মন থেকে কাজ করে না, তাঁরা আসলে কিছুই অর্জন করতে পারে না। আর করলেও সেটা হয় অর্ধেক হৃদয়ের সফলতা। তাতে সব সময়ই একরকম তিক্ততা থেকে যায়।
৪. জীবন হলো একটি জটিল খেলা। ব্যক্তিত্ব অর্জনের মধ্য দিয়ে তুমি তাকে জয় করতে পার।
৫. আমরা তখনই স্মরণীয় হয়ে থাকবো, শুধুমাত্র যখন আমরা আমাদের উত্তর প্রজন্মকে উন্নত ও নিরাপদ ভারত উপহার দিতে পারবো।
৬. জীবন এবং সময় পৃথিবীর শ্রেষ্ট শিক্ষক। জীবন শিখায় সময়কে ভালভাবে ব্যবহার করতে সময় শিখায় জীবনের মূল্য দিতে।
৭. তোমার কাজকে ভালবাস কিন্তু তোমার কোম্পানিকে ভালবাসো না। কারন তুমি হয়ত জান না কখন কোম্পানিটি তোমাকে ভালবাসবে না।
৮. তুমি যদি সূর্যের মতো আলো ছড়াতে চাও, তাহলে আগে সূর্যের মতো জ্বলো,
৯. ছাত্রজীবনে বিমানের পাইলট হতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সেই স্বপ্ন পূরণে ব্যর্থ হয়ে, হয়ে গেলাম রকেট বিজ্ঞানী।
১০. জীবন হলো এক জটিল খেলা। ব্যক্তিত্ব অর্জনের মধ্য দিয়ে তুমি তাকে জয় করতে পার।
১১. স্বপ্ন বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত তোমাকে স্বপ্ন দেখতে হবে। আর স্বপ্ন সেটা নয় যেটা তুমি ঘুমিয়ে দেখ, স্বপ্ন হল সেটাই যেটা পুরণের প্রত্যাশা তোমাকে ঘুমাতে দেয় না।
১২. তুমি তোমার ভবিষ্যত পরিবর্তন করতে পারবে না কিন্তু তোমার অভ্যাস পরিবর্তন করতে পারবে এবং তোমার অভ্যাসই নিশ্চিত ভাবে তোমার ভবিষ্যত পরিবর্তন করবে।
১৩. একটি ভাল বই একশত ভাল বন্ধুর সমান কিন্তু একজন ভাল বন্ধু একটি লাইব্রেরীর সমান।
১৪. সফলতার গল্প পড়ো না কারন তা থেকে তুমি শুধু বার্তা পাবে। ব্যার্থতার গল্প পড় তাহলে সফল হওয়ার কিছু ধারনা পাবে।
১৫. জাতির সবচেয়ে ভাল মেধা ক্লাসরুমের শেষ বেঞ্চ থেকে পাওয়া যেতে পারে।
১৬. আমরা শুধু সাফল্যের উপরেই গড়ি না, আমরা ব্যর্থতার উপরেও গড়ি।
১৭. একজন খারাপ ছাত্র একজন দক্ষ শিক্ষকের কাছ থেকে যা শিখতে পারে তার চেয়ে একজন ভালো ছাত্র একজন খারাপ শিক্ষকের কাছ থেকে অনেক বেশী শিখতে পারে ।
১৮. আকাশের দিকে তাকাও। আমরা একা নই। মহাবিশ্ব আমাদের প্রতি বন্ধুপ্রতীম। যারা স্বপ্ন দেখে ও সে মতো কাজ করে, তাদের কাছেই সেরাটা ধরা দেয়।
১৯. আমি আবিষ্কার করলাম সবচেয়ে দ্রুতগতিতে বেশী বিক্রি হয়ে যায় সিগারেট ও বিড়ি। অবাক হয়ে ভাবতাম, গরিব মানুষেরা তাদের কঠোর পরিশ্রমে উপার্জিত অর্থ এভাবে ধোঁয়া গিলে উড়িয়ে দেয় কেন।
২০. অনেক বেশি পজিটিভ হও।কারণ নেগেটিভ সবসময়ই ক্ষতিকর।
২১. জীবনে সমস্যার প্রয়োজন আছে। সমস্যা আছে বলেই সাফল্যের এতো স্বাদ।
২২. যে হূদয় দিয়ে কাজ করে না, শূন্যতা ছাড়া সে কিছুই অর্জন করতে পারে না।
২৩. শিক্ষাবিদদের বিচক্ষণতা, সৃজনশীলতার পাশাপাশি উদ্যোগী হওয়ার ও নৈতিক নেতৃত্বেরও শিক্ষা দেওয়া উচিত। সেই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিজেকে পথিকৃত্ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার যোগ্যতা অর্জন করা উচিত।
২৪. ফেল করে হতাশ হবেন না। ইংরেজি শব্দ ফেল (Fail) মানে First Attempt in Learning অর্থাৎ শেখার প্রথম ধাপ। অর্থাৎ বিফলতাই আপনাকে সফল হবার রাস্তা বাতলে দেবে।
২৫. যদি একটা দেশকে সম্পূণর্রূপে দুর্নীতিমুক্ত ও একটা জাতিকে সুন্দর মনের অধিকারী করতে হয়, তাহলে আমি বিশ্বাস করি, তিনজন ব্যক্তি এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখতে পারেন- বাবা, মা ও শিক্ষক।
২৬. যদি কোন দেশ দুর্নীতিমুক্ত হয় এবং সবার মধ্যে সুন্দর মনের মানসিকতা গড়ে ওঠে, আমি দৃঢ়তার সঙ্গে বিশ্বাস করি সেখানকার সামাজিক জীবনে তিন রকম মানুষ থাকবে, যারা পরিবর্তন আনতে পারেন। তারা হলেন পিতা, মাতা ও শিক্ষক।
২৭. শিক্ষাবিদদের উচিত শিক্ষার্থীদের মাঝে অনুসন্ধানী, সৃষ্টিশীল, উদ্যোগী ও নৈতিক শিক্ষা ছড়িয়ে দেয়া, যাতে তারা আদর্শ মডেল হতে পারে।
২৮. তরুণ প্রজন্মের কাছে আমার আহ্বান হলো ভিন্নভাবে চিন্তা করার সাহস থাকতে হবে। আবিষ্কারের নেশা থাকতে হবে। যেপথে কেউ যায় নি, সে পথে চলতে হবে। অসম্ভবকে সম্ভব করার সাহস থাকতে হবে। সমস্যা চিহ্নিত করতে হবে এবং তারপর সফল হতে হবে। এগুলোই হলো সবচেয়ে মহৎ গুণ। এভাবেই তাদেরকে এগিয়ে যেতে হবে। তরুণদের কাছে এটাই আমার বার্তা।
২৯. উত্কর্ষ একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া এবং এটা কোনো দুর্ঘটনা নয়।
৩০. জীবন এক কঠিন খেলা। এই খেলায় জয় তখনই সম্ভব, যখন তুমি ব্যক্তি হিসেবে জন্মগতভাবে পাওয়া অধিকারকে ধারণ করবে।
No comments:
Post a Comment
পোস্টটি ভালো লাগলে কমেন্ট করুন। আপনার কোন তথ্য সংরক্ষণ বা প্রকাশ করা হবে না। আপনি Anonymous বা পরিচয় গোপন করেও কমেন্ট করতে পারেন।