সনাতন ধর্ম সম্পর্কে ১৬টি মারাত্মক ভুল ধারণা - UHC বাংলা

UHC বাংলা

...মুক্ত চিন্তায় বিশ্বাসী একটি গ্লোবাল বাংলা প্লাটফর্ম!

ব্রেকিং নিউজ

Home Top Ad

Friday, April 5, 2019

সনাতন ধর্ম সম্পর্কে ১৬টি মারাত্মক ভুল ধারণা

সতর্কতাঃ ভালো করে লক্ষ্য করুন।

সনাতন পৃথিবীর একটি সবচেয়ে পুরাতন ধর্ম। কিন্তু আজ অনেক ভুল ও মিথ্যা ধারণা এর সাথে জড়িয়ে গেছে। তার একটি কারণ হতে পারে মানুষ সম্ভবত জ্ঞানের জন্য সঠিক সোর্স ব্যবহার করেনি। এখনকার দিনে সনাতন ধর্মের উপর যেসব বই  বাজারে পাওয়া যাচ্ছে তার অধিকাংশ পশ্চিমারা লিখেছেন। তারা ইচ্ছাকৃত হোক আর অনিচ্ছাকৃত হোক সনাতনের প্রকৃত সারাংশ বুঝতে অসমর্থ হয়েছেন। তারা একটি গড়বড়ে ও ভুল ধারণার জন্ম দিয়েছেন। আমি এখানে সেগুলো তুলে ধরার চেষ্টা করছি।



মনের অজান্তে অনেক বিদেশী সনাতনের কিছু টার্মকে তাদের নিজেদের টার্মের সাথে গুলিয়ে ফেলেছেন। যেমন ধরুন তারা ব্রাম্মনকে God, আত্মাকে soul, স্বর্গকে  heaven, নরককে  hell এবং পাপকে sin  হিসেবে ধরেছেন। কিন্তু এগুলো এভাবে তুলনাযোগ্য নয়। পবিত্র গ্রন্থ যেমন উপনিষদ বুঝতে হলে অবশ্যই তার নিজস্ব শব্দ  বুঝতে হবে অন্য কোন কিছুর প্রেক্ষিতে নয়।

ভুল ধারণা  ১: সনাতন একটি ধর্ম

সবচেয়ে বড় ভুল ধারণা হলো অনেক মানুষ ভাবে সনাতন একটি ধর্মীয় বিশ্বাস। আরো সঠিক ভাবে বলা যায় সনাতন জীবনের একটি পথ - ধর্ম। আসলে ধর্ম বলতে এখানে religion বুঝায় না। এখানে ধর্ম বলতে এমন কিছুকে বুঝা যা সকল কর্মকে নিয়ন্ত্রিত করে। সনাতন কোন একজন মহাপুরুষের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়নি। এখানে কোন মুল মতবাদ নেই। এখানে কোন কেন্দ্রীয় প্রভুত্ব নেই। এটা তার অনুসারীদের একমাত্র বা একধরণের মতবাদে সীমাবদ্ধ রাখে না। কেউ বলতে পারেনা কখন কোথায় এর শুরু হয়েছে।

ব্যাখ্যা : হিন্দুধর্ম ( Hinduism) শব্দটি সনাতনের কোন গ্রন্থে পাওয়া যায় না। এই নামকরণটি এসেছে সিন্ধু প্রদেশের মানুষের থেকে যারা ইন্দুস এবং সিন্ধু নদীর মধ্যবর্তী অঞ্চলে বসবাস করেন। এটা এখন পাকিস্তানের অন্তর্গত । পারস্য বা ইরানের মানুষেরা সিন্ধু অববাহিকার মানুষের নাম দিয়েছিলেন হিন্দু। সনাতন প্রকৃতপক্ষে বৈচিত্র্যময়, দর্শন কালচারাল আইডিয়া, বিশ্বাস এবং ঐতিহ্য। সনাতন জন্মান্তরবাদ, কর্ম, স্বাধীনতা, সঠিক পথ  এবং জন্ম -মৃত্যুর একটি পরম চক্র।
ভুল ধারণা  ২: সনাতনে ৩৩ কোটি ঈশ্বর আছে
বেদে লক্ষ লক্ষ দেব - দেবীর কথা কোথাও উল্লেখ্য নেই। কিন্তু ৩৩ জন সর্বোচ্চ/অদ্বিতীয়/মহীয়ান  দেব - দেবীর কথা বলা হয়েছে।উদাহরণ -  যজুর্বেদ অথর্ববেদ সপ্তব্রম্ম এবং আরো কিছু বেদের লেখাতে। ৩৩ দেবদেবীর সংখ্যাটি পার্সি ভাষায় আভেস্তা ( Avesta) গ্রন্থে আছে। কোটি শব্দ বলতে এখানে সংখ্যা বুঝায় না কোটি বলতে এখানে সর্বোচ্চ/অদ্বিতীয়/মহীয়ান : অগ্রগণ্য,উত্তম বুঝানো হয়েছে। ৩৩ সর্বোচ্চ/অদ্বিতীয়/মহীয়ান
 দেবদেবীর কথা বলা হয়েছে। কোটির আরেকটি অর্থ হচ্ছে উচ্চ কোটি ( ‘Uchha koti’)।

সমস্যা তখনো ছিল ৭২৫ (AD ) ক্রিস্টপূর্বে যখন  শুভাকারাশিমা ( Subhakarasimha) এবং তার চীনা সহকর্মী ই-হাসিং ( I-hsing) যখন  মহাভাইরোকোনা- সূত্র  (Mahavairocana-sutra) চীনা ভাষায় অনুবাদ করেছিলেন। তারা সপ্ত-কোটি -বুদ্ধ কে (Sapta-Koti-Buddha) সিঁচি কোটেই বুৎসু   (Shichi - sapta) (Kotei - koti) (Butsu - Buddha)  অনুবাদ করেছিলেন। তারাও এখানে কোটি শব্দটি বুঝতে অসমর্থ হয়েছিলেন। কোথাও সাত কোটি বুদ্ধ নেই  - আছে ৭ জন সর্বোচ্চ/অদ্বিতীয়/মহীয়ান বুদ্ধ: ৬ জন পূর্বসুরী এবং ১ জন ঐতিহাসিক বুদ্ধ। তিব্বতীয় যেসব গুরুরা সংস্কৃত শব্দ তিব্বতীয় অনুবাদ করেছিলেন তারা কোটি বলতে শ্রেণী, প্রকার ও বিভাগ ( 'class, kind, category') বুঝিয়ে ছিলেন।

ব্যাখ্যা : ব্রহধারণ্য উপনিষদে (Brihadaranyaka Upanishad) তৃতীয় অধ্যায়ে  যাজ্ঞবল্ক্য  (Yajnavalkya) ৩৩ জন দেবদেবীর কথা বলেছিলেন। তারা হলেন  ৮জন ভাসু, ১১ জন রুদ্র, ১২ জন আদিত্য এবং  ইন্দ্র ও প্রজাপতি ( ৮+১১+১২+২=৩৩)।  Of these 8 are Vasus, 11 Rudras, 12 Adityas, and Indra and Prajapati. 8 Vasus + 11 Rudras + 12 Adityas + 2 Heaven and Earth ( 8+ 11 + 12 + 2 = 33)!

ভুল ধারণা  ৩: সনাতন একটি   মুক্ত উৎসের (Open-Source)  ধর্ম
সনাতন স্বচ্ছন্দময় এবং সহিষ্ণু। তার আমি এই নয় যে আমরা সব কিছুর জন্য মুক্ত। বেদকে বলা হয় শ্রুতি। তার মনে হল কোন রকম রদবদল যোগ্য নয় (meaning that no kind of alteration is permitted)।  মন্ত্রগুলো ঠিক যেভাবে আছে সেভাবেই পাঠ করতে হবে। আমি কি ভগবৎ গীতা সংস্করণ করে  ১৮টি অধ্যায়ের সাথে ৩০টি অধ্যায় যোগ করতে পারি ? আপনি যদি ঋগ্বেদ বেদের  একটি শব্দ পরিবর্তন করেন তাহলে সেটা অসিদ্ধ/অকার্যকর হবে।

ভুল ধারণা  ৪: সনাতনের ভিতর নাস্তিকতা আছে
প্রাচীন ভারতীয় দর্শনে বেশ কিছু নাস্তিকতার স্কুল ছিল। কিন্তু তার মানে এই নয় যে সনাতন ধর্মশাস্ত্র নাস্তিকতা অনুসরণ করেছে। সনাতন দর্শন হলো একটি উপসেট যার সমস্ত কিছু ভারতীয় উপমহাদেশ থেকে উৎপন্ন/ আরম্ভ হয়েছে। এর সকল গ্রন্থে ঈশ্বরবাদ বা আস্তিকতার কথা সুস্পষ্ট ভাবে বলা হয়েছে। বেদে ঈশ্বরের কথা বলা হয়েছে। ভগবৎ গীতায় শ্রীকৃষ্ণ ভগবান সম্পর্কে কোন সন্দেহ রাখেননি। আদি শঙ্কর ( Adi Shankara) ভজ গোবিন্দ (Bhaja Govindam)  সম্পর্কে কোন সন্দেহ রাখেননি।

ভুল ধারণা  ৫: হিন্দুরা সনাতন ধর্মের সদস্য
হিন্দু তারাই যারা ইন্দুস  নদীর দক্ষিণ-পূর্বে বসবাস করেন। মূলত ভারতীয়রা হিন্দু। সনাতন ধর্ম তখনই অনুসরণ করা হবে যখন বিভিন্ন দেবদেবীতে বিশ্বাস করা হবে। সনাতন ধর্মের এই ঈশ্বর পৃথিবীতে প্রচলিত অন্যান্য ধর্মের ঈশ্বরের মতো নয়। সনাতনের দেবদেবী হলো প্রকৃতির শক্তি (natural elements), মানুষের আবেগ (human emotions),কামনা ( desires) এবং কর্ম (actions)।

ভুল ধারণা  ৬: হিন্দুরা মূর্তি পুজা করে
প্রকৃতপক্ষে, হিন্দুরা স্মৃতিচিহ্ন বা অবয়ব ঈশ্বরের পুজা করে। কোন হিন্দুই বলবে না তারা মূর্তি পুজা করে।  বরং তারা বিশ্বাস করে ঈশ্বরের শারীরিক উপস্থাপনা। প্রতিমার আকৃতি  তাদের এমন একটি দৃষ্টিভঙ্গির  উপর ফোকাস করে  প্রার্থনা বা  ধ্যান করতে সাহায্য করে। উদারন স্বরূপ বলা যায় কেউ যখন নতুন ব্যবসা শুরু করে তখন গণেশের ছবি বা প্রতিমা রাখে। সেই গণেশের ছবি বা প্রতিমা তাকে  প্রার্থনা বা  ধ্যান করতে সাহায্য করে।

ভুল ধারণা  ৭: হিন্দুরা গরু পুজা করে
হিন্দুরা গরু পুজা করে না।  কিন্তু তারা সকল সৃষ্টি ও জীবনকে পবিত্র মনে করে। হিন্দুরা বিশ্বাস করে প্রত্যেক জীবিত বস্তুর একটি আত্মা আছে। ইটা সত্য যে গোমাতা হিন্দু সমাজে একটি বিশেষ স্থান দখল করে আছে। তাই হিন্দুরা গোমাংশ খায় না। গরুকে হিন্দু সমাজে ধীরপ্রকৃতির জননীসুলভ চোখে দেখা হয় যা পুষ্টিকর খাদ্য দুধ দেয় এবং অন্যান্য উপকারে আসে। যেমন চাষাবাদ।
ভুল ধারণা ৮ : হিন্দুরা বৈষম্যমূলক জাতিভেদে সমর্থন করে
প্রকৃতপক্ষে জাতিভেদ বা কাস্ট সিস্টেম আমাদের ধর্মের কোন অংশ নয় কিন্তু সংস্কৃতির। জাতিভেদ একটি প্রাচীন পেশাগত প্রথা যা হিন্দু গ্রন্থে বর্ণিত আছে যাজকতন্ত্রের মতো কঠোর ভাবে আমাদের সমাজে গেঁথে যায়। ধর্মীয় গ্রন্থে জাতিভেদ কর্মের ভিত্তিতে নিরুপন করা হলেও পরে সেটি বংশ তন্ত্রের ভিত্তিতে গেঁথে যায় আমাদের সমাজে।  একথা সত্য যে সবচেয়ে নিচু জাতি বা অচ্ছুৎদের অনেক  নিপীড়ন সহ্য করতে হয়েছে। আধুনিক হিন্দুরা বিশ্বাস করে জাতিভেদ আমাদের সমাজের জন্য অপরিহার্য নয় এবং তা ধর্মীয়ভাবে অনুমোদিত না।

ভুল ধারণা ৯ : ভগবত গীতা কোরান বা বাইবেলের মতো
হিন্দু ধর্মে কোরান বা বাইবেলের মতো কোন মুখ্য গ্রোথ নেই। বরং সনাতন অনেকগুলো ধর্মশাস্ত্র/ধর্মগ্রন্থ
এর সমন্বয়ে সমৃদ্ধ। হিন্দুরা বিশ্বাস করে যে ঈশ্বর হাজার বছর ধরে মানুষের মুখে মুখে সত্য জ্ঞান ছড়িয়ে দিয়েছেন। এই ধর্মীয় শাস্ত্রগুলোর মধ্যে বেদ,  উপনিষদ, পুরাণ  এবং ভগবত গীতা। এগুলো ঈশ্বরের গান/গীতিকবিতা  (Song of God) নামেও পরিচিত। ভগবত গীতা মহাকাব্য মহাভারতের একটি অংশ এবং এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় কবিতা। এতে হিন্দু ধর্মের মূল বিশ্বাস বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু সব হিন্দুরা ভগবত গীতা পরে না।

ভুল ধারণা ১০ : কর্ম দর্শনের মতো
প্রত্যেক মানুষের তার জীবনের কর্ম ঠিক করার অধিকার রয়েছে। এটাই কর্মের মতবাদ : প্রতিটি কর্মের জন্য একটি গতি আছে এবং সেই গতিতে  একটি অনুরূপ প্রতিক্রিয়া আছে। হিন্দুরা বিশ্বাস করে তাদের পুনর্জন্মের কর্মফল ভোগ করতে হবে। প্রতিটি ব্যক্তি কাজের মাধ্যমে  তার ভাগ্য সৃষ্টি করে। চূড়ান্ত লক্ষ্য হলো এমন কর্মকাণ্ড যা একটি আত্মাকে মুক্ত করে এবং মোক্ষ লাভ করবে, বা পুনরুত্থানের চক্র থেকে মুক্তি পাবে।

ভুল ধারণা ১ : হিন্দু গ্রন্থগুলো  আধ্যাত্মিকতা সম্পর্কে বর্ণিত
যে গ্রন্থগুলো এখন আমরা হিন্দু ধর্মগ্রন্থ হিসাবে শ্রেণিবদ্ধ করেছি তা  কেবল আধ্যাত্মিকতা সম্পর্কিত গ্রন্থ  নয় বরং বিজ্ঞান, মেডিকেল সাইন্স  এবং প্রকৌশল মত ধর্মনিরপেক্ষ কাজ অন্তর্ভুক্ত। এটা সনাতন অন্য ধর্মগুলোর মতো শ্রেণীভুক্ত না হওয়ার আর একটি কারণ। উপরন্তু, এটি স্কুলের  পদার্থবিদ্যা তাও  দাবি করা যাবে না। না যাচ্ছে না  'অন্যান্য দুনিয়া' হিসাবে বর্ণনা করা।প্রকৃতপক্ষে,  সভ্যতার সাথে হিন্দুধর্মকে প্রায়শই শনাক্ত করতে পারে যা সবচেয়ে সমৃদ্ধ হয়।

ভুল ধারণা ১ : স্যালভেশন বা পরিত্রাণ শব্দটি মোক্ষের মতো নয়
 স্যালভেশন বা পরিত্রাণ শব্দটি দুর্বোধ্য যা অনেক কিছুকে বুঝায়। এটি কেবল মাত্র একটি প্রশ্ন নয় যে কেউ কিভাবে রক্ষা পেতে পারে। বরং কথা থেকে রক্ষা পাবে এবং কোথায় যাবে সেটিও। হিন্দুধর্মে , "পরিত্রাণ" প্রায়ই "মোক্ষ" হিসাবে পরিচিত, যার অর্থ সর্বাধিক আক্ষরিক "মুক্তি"। একজন পাপ থেকে রক্ষা পেতে পারে কিন্তু নিজের অস্তিস্ত্ব থেকে নয়।মোক্ষের উদ্দেশ্য হলো   আত্মার পুনর্জন্ম চক্র থেকে মুক্তি পাওয়া।

ভুল ধারণা ১ : হিন্দুদের মাংস খেতে অনুমতি দেওয়া হয়েছে
হিন্দুধর্ম তার অনুগামীদের নিরামিষভোজী  হতে বাধ্য করে না।হিন্দুধর্মের অনেক অনুসারী নিরামিষাশী নয়, যদিও  নিরামিষভোজী ডায়েটকে প্রাণীর  প্রতি  অহিংসার (অহিংসার) নীতি অনুসারে উৎসাহিত করা হয়।

ভুল ধারণা ১: হিন্দুধর্মের নারীর স্থান পুরুষের সমান নয়
আমাদের প্রাচীন সমাজে পুরুষ এবং মহিলারা   বিভিন্ন পেশায় জড়িত ছিল। তারা (পুরুষ এবং মহিলা)  উভয় ক্ষেত্রেই বেশ বিবেচক ও শ্রদ্ধাশীল ছিল এবং সুযোগ থাকলে বিদ্যমান ব্যক্তিরা তাদের পেশা বা দক্ষতাগুলিতে পছন্দ বা পরিবর্তন করতে মুক্ত(Free ) ছিল।বৈদিক প্রার্থনাগুলিও নির্দেশ করে যে, নারীরা তাদের বিয়ের অংশীদারদের ( Partner ) বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্যঅধিকার আছে এবং তাদের স্বামী মতো  একই অধিকার উপভোগ করা এবং  একচেটিয়া সম্পর্কের (monogamous relationships)  মধ্যে বসবাস করার জন্য অনুপ্রাণিত ।তদুপরি, বেদে বাল্যবিবাহ, যৌতুক ব্যবস্থা এবং সতীদাহ প্রথার খুব  সামান্য প্রমাণ রয়েছে।
একইভাবে, বিধবাদের সাথে বা বিধবাদের পুনর্বিবাহে  কোন  বাধা নেই। নারীর বিরুদ্ধে সতীদাহ প্রথা বা সহমরণের মতো কোন ধর্মীয় প্রথা কোথাও উল্লেখ্য নেই। উল্লেখ্য যে, সুশিক্ষিত, পণ্ডিত ও কর্মজীবী  নারীরা  পুরুষের সাথে অনেক দার্শনিক বিতর্কে অংশগ্রহন করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে গারগী (  বৃহদারণ্যক  উপনিষদে বর্ণিত ভচাকনু কন্যা )  অন্যতম।
ভুল ধারণা ১৫ : মনুস্মৃতি একটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক ও ধর্মীয় পাঠ্য
মনু স্মৃতি (Manu's proclamation) হিন্দু বর্ণ-আশ্রম ধর্মের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসাবে বিবেচনা করা একটি বড় ধরণের  ভুল। অনেকে মনুস্মৃতিকে স্মৃতি (বা স্মৃতি)  হিসাবে বর্ণনা করে যা   শ্রুতি (বা বেদ) এর বিপরীত ধারণা পোষণ করে  বিশেষ করে নারী ও বর্ণপ্রথা সম্পর্কে। মনুস্মৃতি (Manu-smriti ) কখনই হিন্দুদের জনপ্রিয় গ্রন্থ ছিল না। তাছাড়া,  এটি একটি ধর্মীয় বা সামাজিক টেক্সট (গ্রন্থ) হিসাবে কখনো ব্যবহৃত হয়নি।
ভুল ধারণা ১৬ : হিন্দুধর্ম বস্তুবাদী সমাজের বিরোধী
 হিন্দুধর্ম বলছে বস্তুবাদী বা সেক্সচুয়াল আনন্দ কোন দীর্ঘস্থায়ী সুখ দেবে না। এটি  বলে যে উপভোগের জন্য যেকোনো অচল অনুসন্ধানের পিছনে সর্বদা ব্যথা থাকে।হিন্দুধর্ম সংযম অনুশীলন, সচেতন হওয়া এবং আত্মহারা না হতে  পরামর্শ দেয়।হিন্দুধর্ম একটি স্বাধীন পথ যা - জীবনের  জীবনের চূড়ান্ত লক্ষ্য এবং অধিকাংশ সময় লক্ষ্য অর্জনের  প্রতি অগ্রগতির  পথ - মোক্ষ, যা অন্তর্ভুক্ত করেছে  ন্যায়পরায়ণতা ( ধর্ম ), অর্থ (বস্তুবাদ) এবং কাম (sensual enjoyments)।

 অনুবাদ:লেখাটি পল্লবী ঠাকুরের লেখা হতে অনুবাদ করা হয়েছে।[full_width]


এই গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদনটি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ!

No comments:

Post a Comment

পোস্টটি ভালো লাগলে কমেন্ট করুন। আপনার কোন তথ্য সংরক্ষণ বা প্রকাশ করা হবে না। আপনি Anonymous বা পরিচয় গোপন করেও কমেন্ট করতে পারেন।

অন্যান্য

Post Bottom Ad

আকর্ষণীয় পোস্ট

code-box