বিদ্যানন্দ: আজ কিশোর কুমার দাসের হেঁটে যাওয়া পথের সঙ্গী সমগ্র বাংলাদেশ! - UHC বাংলা

Untitled+2

...মুক্ত চিন্তায় বিশ্বাসী একটি গ্লোবাল বাংলা প্লাটফর্ম!

Home Top Ad

Monday, April 20, 2020

demo-image

বিদ্যানন্দ: আজ কিশোর কুমার দাসের হেঁটে যাওয়া পথের সঙ্গী সমগ্র বাংলাদেশ!

আত্মহত্যার প্রবনতা ছিল, জীবনে দুইবার তিনি সুইসাইডাল চিন্তা করেছিলেন। একবার শৈশবে অভাবের বঞ্চনায়, আবার পরিণত বয়সে যখন তার সব আছে, তখন।

শৈশব দিয়েই শুরু করি, তার পরিবারে তিনবেলা খাবারের নিশ্চয়তা ছিল না, দুপুরে রান্না হলে, রাতের খাবার ছিল অনিশ্চিত।

অনেকেই শৈশবে ফিরে যেতে চায়, কিন্তু তিনি কখনো শৈশবে ফিরতে চান না। প্রচন্ড ক্ষুধার যন্ত্রণা, অভাব আর বঞ্চনার অনুভূতি তার স্মৃতিতে প্রবল।

ক্ষুধা পেটে রাস্তায় যখন হাটতেন তখন দেখতেন বিত্তবানরা দামী খাবার খাচ্ছে, তিনি তাকিয়ে থাকতেন, যদি কখনো কেজন তাকে দেখে খাবার তুলে দেয়! কেউ দেয়নি।

90251196_3205264916170436_2187302818082193408_n


তিনি উপলব্ধি করতেন জন্মগত কারনে গরীব বঞ্চিত, আশেপাশের ধনী মানুষগুলোকে দেখে তিনি তিনি অবাক বিস্ময়ে ভাবতেন ওদের অনেক আছে তবুও কেন ওরা আমাদের টেনে তুলছে না? খুব ছোট বয়সেই তিনি বুঝে যান ধনী গরীবের বৈষম্য।

সংখ্যালঘু নির্যাতনের কারনে প্রায় সব সদস্য দেশ ছেড়ে বহু আগেই চলে গিয়েছিল, কেবল টিকে ছিল তার পরিবার। তিনি কখনো তার আত্মীয়দের দেখেননি। বিপদে কখনো পাননি নির্ভরতার ছায়া।

বাবা ছিলেন তৃতীয় শ্রেণির সরকারী কর্মচারী। যে সামান্য আয় তাতে পাঁচ ছেলেমেয়েকে নিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হতো প্রতিনিয়ত। অভিমান হতো খুব বাবা মার প্রতি, এই সমাজের প্রতি।

শারিরিক কিছু প্রতিবন্ধকতা কারনে স্কুলে কেউ তাকে বন্ধু হিসেবে গ্রহন করেনি, পরিবারেও তিনি ছিলেন আলাদা, একাকী।

পড়াশুনায় মারাত্মক খারাপ ছাত্র ছিলেন। ফেল করতেন অন্তত ছয় সাত সাবজেক্টে। বন্ধুহীন তিনি শুয়ে শুয়ে সৃষ্টিকর্তাকে ডাকতেন কেবল- আমাকে একটা সুযোগ দাও, আমি ভালো কিছু করবো।

মিরাকেল ঘটল যেন, যেই ছেলে কখনো অংকে পাশ করতে পারেনি, সে নব্বই পচানব্বই করে পাওয়া শুরু করল। কিন্তু ঐ যে অভাব যার নিত্যসঙ্গী পথ তার এতো মসৃণ নয়, এসএসসি পর টাকার অভাবে দুই বছর বন্ধ ছিল পড়াশুনা করতে পারেননি, নিজে টিউশনি করিয়ে টাকা জমিয়ে ইন্টারে ভর্তি হন।

এরপর কেবল এগিয়ে চলা। ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেন, একের পর এক সিভি ড্রপ করেন,সিও পোস্ট থেকে কেরানী। অল্প সময়ের ব্যবধানেই চাকুরী পেয়ে যান, একে একে দেশের টপ প্রাইভেট অর্গানাইজেশনের উচ্চ পদে কাজ করেন তিনি, আরও বড় পোস্টে বড় কর্মকর্তা করে পাঠানো হয় বিদেশে।

কিন্তু বিদেশের মাটিতে প্রবল সম্পদের মাঝে থেকে তিনি উপলব্ধি করেন, জীবনের অর্থ কী? একদিন তার টাকা ছিল না, টাকার অভাবে ঘরে ভাত ছিল না, আজ টাকা আছে কিন্তু এই টাকা দিয়ে কি হবে? ছাদের কিনারায় দাড়িয়ে তিনি ভাবে যদি লাফিয়ে পড়ি, মরে যাব, দুইদিন সবাই কাঁদবে, তারপর ভুলে যাবে। তবে কেন এতো সংগ্রাম, তবে কেন এই মানবজনম?

জীবনের অর্থ খুজেতে তিনি বের হন। পথে খুঁজেন কিছু বোকা মানুষ। কারন বোকারাই গড়তে জানে, চালাকরা খোঁজে স্বার্থ। কিছু বোকা মানুষ পেয়ে যান, মাত্র পাঁচজনকে নিয়ে গড়ে তুলেন একটি সংগঠন। সেই সংগঠনটি আজ লাখ লাখ অভুক্ত, বঞ্চিত, আশাহীন মানুষের বেঁচে থাকার ভরসা, আশার প্রদীপ।

জীবনের প্রতি তার এক্সপেকটেশন নেই, তিনি পরিশ্রম করতে জানেন, সফলতা চান না, কেবল হেঁটে যেতে চান

তার হাতে গড়া সংগঠনটির নাম বিদ্যানন্দ। এক টাকার আহার।

তিনি কিশোর কুমার দাস

আজ কিশোর কুমার দাসের হেঁটে যাওয়া পথের সঙ্গী সমগ্র বাংলাদেশ

#তিনি_আমাদের_সময়ের_আশার_বাতিঘর

অন্যান্য

Post Bottom Ad

আকর্ষণীয় পোস্ট

code-box

Contact Form

Name

Email *

Message *