নারী নির্যাতন, ভ্রূণ হত্যা, শিশু বিবাহ, ধর্ষণ – এগুলো লেগেই আছে মূলত পিতৃতান্ত্রিক সমাজে। আজও সেখানে প্রকাশ্য দিবালোকে গণধর্ষণ হচ্ছে, ডাইনি অপবাদে পুড়িয়ে হত্যা করা হচ্ছে নারীকে৷
তাই মহিলা পুরোহিতের অস্তিত্ব যে আদৌ থাকতে পারে, সে কথা না দেখলে বিশ্বাস না হওয়াটাই স্বাভাবিক৷
বর্ষার কথায়, ‘‘হাজার বছরের ঐতিহ্য, পরম্পরাকে ভেঙে এ পেশায় আসাটা সহজ ছিল না৷ অনেকে তো মনে করেন মেয়েরা নাকি এত কঠিন কঠিন সংস্কৃত শ্লোক, মন্ত্র ইত্যাদি মুখস্থ করে ঠিকমতো উচ্চারণই করতে পারবে না৷''
মনে পড়ে ভারতের প্রথম দু'জন নারী পুরোহিতের কথা৷ নাম ছিল – লক্ষ্মী আর ইন্দিরা৷ পুরোহিত হওয়ার জন্য তাঁদের প্রায় চার মাস প্রশিক্ষণ নিতে হয়েছিল৷ ভারতীয় সমাজের প্রেক্ষাপটে এই দুই নারীকে পুরোহিত হিসেবে নিয়োগ – ঘটনাটিকে ছোটখাট একটা বিপ্লবের তুলনায় কোনো অংশে কম মনে হয়নি তখন৷ যেদেশে বিধবাদের পুজোর সবরকম আয়োজন থেকে দূরে রাখা হয়, যেখানে বিধবারা এখনও নানাভাবে অনাকাঙ্ক্ষিত, সেখানে তাঁদের মন্দিরের মতো জায়গার দায়িত্ব দেওয়া তো আর যে সে কথা নয়! সে সময় কট্টরপন্থিরা এর বিরোধিতা করলেও, শেষ পর্যন্ত সে সব ধোপে টেকেনি৷
তবে এবার পুণেতে যেটা ঘটলো, সেটা আরো অকল্পনীয়৷ অবশ্য শুধু বর্ষা গাডগিল নয়, পুণেতে এমন আরো কয়েকজন মহিলা পুরোহিত হিসেবে কাজ করছেন৷ অর্থাৎ খালি গা, গলায় গামছা আর ধুতি পরা পুরুত ঠাকুরের জায়গায় একেবারে শাড়ি পরা পুরোহিত – নারী স্বাধীনতার এ এক অসাধারণ দৃষ্টান্ত নয় কি?
ঘটনা এখানেই শেষ নেই,চলুন যাওয়া যাক বাংলাদেশের খবরে,
ঢাক-ঢোল পিটিয়ে চলছে দুর্গাপূজা। সারাদেশের মতো নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার বাঙালীপুর ইউনিয়নের বৈষ্য মালিপাড়াও মেতেছে পুজোর আনন্দে। তবে সেখানকার আনন্দের ধরণটা একটু ভিন্ন।
পেশাগত কারণে গ্রামের পুরুষরা সবাই এখন বাড়ির বাইরে। বংশ পরম্পরায় পেশাগত ঢাকবাদক (ঢুলি) হওয়ায় তাদের প্রায় সবাই এখন বিভিন্ন এলাকার মণ্ডপে ঢাক বাজাতে ব্যস্ত। তাই বলে কি পুজো থেমে থাকবে?
স্বর্গের দেবীর পূজার দায়িত্ব নিয়ে নিয়েছেন মর্ত্যের দেবীরা। পাড়ার মন্দিরের প্রতিমা তৈরী, মণ্ডপের উলুধ্বনি, ঢাক-কাঁসর বাজানোসহ পূজা-অর্চনার সমস্ত কাজ করছেন বৈশ্য মালিপাড়ার নারীরা। পুরোহিতের কাজও করছেন নারীরা। নিরাপত্তার দায়িত্বেও রয়েছেন আনসার বাহিনীর পাঁচ নারী সদস্য। স্বেছাসেবকের কাজও করছেন যথারীতি নারীরা।
পুজোর সময় গ্রামের পুরুষরা উপজেলার বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় ঢাকীর কাজ করেনন। তাই দীর্ঘদিন ধরেই গ্রামের মেয়েরাই শারদীয় দূর্গাপুজার সব আয়োজন করে আসছেন।স্থানীয়রা জানান, মণ্ডপের প্রতিমা তৈরী থেকে শুরু করে পুরোহিতের দায়িত্বও পালন করছে নারী।
এবার আরেকটু এগিয়ে আসা যাক পশ্চিমবংগে,
সেখানে ইতিহাসের প্রথম হিন্দু নারী পুরোহিত হিসেবে বিয়ে পড়িয়েছেন
নন্দীনি ভৌমিক। এমনকি এক্ষেত্রে পিতৃতান্ত্রিক কন্যাদানের আচারটিও পালন করতে দেননি তিনি।
নন্দিনী ভৌমিক বলেন, আমি সমাজ থেকে পিতৃতান্ত্রিক মনোভঙ্গি দূর করার জন্য এই কাজ করছি। পিতৃতন্ত্রে কনের বাবা-মা অনেকটা ভোগ্য পণ্যের মতো করেই তাদের কন্যাকে দান করেন।
এই ঘটনাকে নারীর ক্ষমতায়নে একটি মাইলফলক হিসেবে দেখা হচ্ছে। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি আনভিতা জনার্দনন এবং আরকা ভট্টাচার্যের এই বিয়ে পড়ানো হয় কলকাতায়।
এগুলো যে হঠাৎ বা টুকরো ঘটনা না নয় তা নিশ্চই বুঝতে পারছেন। বর্তমানে নারী পুরোহিত ব্যাপার টা আস্তে আস্তে সবার কাছেই স্বাভাবিক হয়ে আসছে,এবং এই সংখ্যাটাও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।আশা করা যায় তা সামনে আরো বাড়বে,কারন শেষ তথ্য অনুযায়ী ১০ হাজারের ও বেশি নারী পুরোহিত শুধু ভারতেই কর্মরত আছেন।
United Hindu Concern
তাই মহিলা পুরোহিতের অস্তিত্ব যে আদৌ থাকতে পারে, সে কথা না দেখলে বিশ্বাস না হওয়াটাই স্বাভাবিক৷
বর্ষার কথায়, ‘‘হাজার বছরের ঐতিহ্য, পরম্পরাকে ভেঙে এ পেশায় আসাটা সহজ ছিল না৷ অনেকে তো মনে করেন মেয়েরা নাকি এত কঠিন কঠিন সংস্কৃত শ্লোক, মন্ত্র ইত্যাদি মুখস্থ করে ঠিকমতো উচ্চারণই করতে পারবে না৷''
মনে পড়ে ভারতের প্রথম দু'জন নারী পুরোহিতের কথা৷ নাম ছিল – লক্ষ্মী আর ইন্দিরা৷ পুরোহিত হওয়ার জন্য তাঁদের প্রায় চার মাস প্রশিক্ষণ নিতে হয়েছিল৷ ভারতীয় সমাজের প্রেক্ষাপটে এই দুই নারীকে পুরোহিত হিসেবে নিয়োগ – ঘটনাটিকে ছোটখাট একটা বিপ্লবের তুলনায় কোনো অংশে কম মনে হয়নি তখন৷ যেদেশে বিধবাদের পুজোর সবরকম আয়োজন থেকে দূরে রাখা হয়, যেখানে বিধবারা এখনও নানাভাবে অনাকাঙ্ক্ষিত, সেখানে তাঁদের মন্দিরের মতো জায়গার দায়িত্ব দেওয়া তো আর যে সে কথা নয়! সে সময় কট্টরপন্থিরা এর বিরোধিতা করলেও, শেষ পর্যন্ত সে সব ধোপে টেকেনি৷
তবে এবার পুণেতে যেটা ঘটলো, সেটা আরো অকল্পনীয়৷ অবশ্য শুধু বর্ষা গাডগিল নয়, পুণেতে এমন আরো কয়েকজন মহিলা পুরোহিত হিসেবে কাজ করছেন৷ অর্থাৎ খালি গা, গলায় গামছা আর ধুতি পরা পুরুত ঠাকুরের জায়গায় একেবারে শাড়ি পরা পুরোহিত – নারী স্বাধীনতার এ এক অসাধারণ দৃষ্টান্ত নয় কি?
ঘটনা এখানেই শেষ নেই,চলুন যাওয়া যাক বাংলাদেশের খবরে,
ঢাক-ঢোল পিটিয়ে চলছে দুর্গাপূজা। সারাদেশের মতো নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার বাঙালীপুর ইউনিয়নের বৈষ্য মালিপাড়াও মেতেছে পুজোর আনন্দে। তবে সেখানকার আনন্দের ধরণটা একটু ভিন্ন।
পেশাগত কারণে গ্রামের পুরুষরা সবাই এখন বাড়ির বাইরে। বংশ পরম্পরায় পেশাগত ঢাকবাদক (ঢুলি) হওয়ায় তাদের প্রায় সবাই এখন বিভিন্ন এলাকার মণ্ডপে ঢাক বাজাতে ব্যস্ত। তাই বলে কি পুজো থেমে থাকবে?
স্বর্গের দেবীর পূজার দায়িত্ব নিয়ে নিয়েছেন মর্ত্যের দেবীরা। পাড়ার মন্দিরের প্রতিমা তৈরী, মণ্ডপের উলুধ্বনি, ঢাক-কাঁসর বাজানোসহ পূজা-অর্চনার সমস্ত কাজ করছেন বৈশ্য মালিপাড়ার নারীরা। পুরোহিতের কাজও করছেন নারীরা। নিরাপত্তার দায়িত্বেও রয়েছেন আনসার বাহিনীর পাঁচ নারী সদস্য। স্বেছাসেবকের কাজও করছেন যথারীতি নারীরা।
পুজোর সময় গ্রামের পুরুষরা উপজেলার বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় ঢাকীর কাজ করেনন। তাই দীর্ঘদিন ধরেই গ্রামের মেয়েরাই শারদীয় দূর্গাপুজার সব আয়োজন করে আসছেন।স্থানীয়রা জানান, মণ্ডপের প্রতিমা তৈরী থেকে শুরু করে পুরোহিতের দায়িত্বও পালন করছে নারী।
এবার আরেকটু এগিয়ে আসা যাক পশ্চিমবংগে,
সেখানে ইতিহাসের প্রথম হিন্দু নারী পুরোহিত হিসেবে বিয়ে পড়িয়েছেন
নন্দীনি ভৌমিক। এমনকি এক্ষেত্রে পিতৃতান্ত্রিক কন্যাদানের আচারটিও পালন করতে দেননি তিনি।
নন্দিনী ভৌমিক বলেন, আমি সমাজ থেকে পিতৃতান্ত্রিক মনোভঙ্গি দূর করার জন্য এই কাজ করছি। পিতৃতন্ত্রে কনের বাবা-মা অনেকটা ভোগ্য পণ্যের মতো করেই তাদের কন্যাকে দান করেন।
এই ঘটনাকে নারীর ক্ষমতায়নে একটি মাইলফলক হিসেবে দেখা হচ্ছে। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি আনভিতা জনার্দনন এবং আরকা ভট্টাচার্যের এই বিয়ে পড়ানো হয় কলকাতায়।
এগুলো যে হঠাৎ বা টুকরো ঘটনা না নয় তা নিশ্চই বুঝতে পারছেন। বর্তমানে নারী পুরোহিত ব্যাপার টা আস্তে আস্তে সবার কাছেই স্বাভাবিক হয়ে আসছে,এবং এই সংখ্যাটাও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।আশা করা যায় তা সামনে আরো বাড়বে,কারন শেষ তথ্য অনুযায়ী ১০ হাজারের ও বেশি নারী পুরোহিত শুধু ভারতেই কর্মরত আছেন।
United Hindu Concern
No comments:
Post a Comment
পোস্টটি ভালো লাগলে কমেন্ট করুন। আপনার কোন তথ্য সংরক্ষণ বা প্রকাশ করা হবে না। আপনি Anonymous বা পরিচয় গোপন করেও কমেন্ট করতে পারেন।